ইয়েমেনে হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর পর ‘উপযুক্ত’ জবাব দেয়ার হুমকি দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। ওয়াশিংটন ডিসির পক্ষ থেকে লোহিত সাগরে চলাচলকারী জাহাজগুলোকে নিরাপত্তা দেয়ার উদ্যোগ নেয়ায় এই গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইয়েমেনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হানস গ্রান্ডবার্গ শনিবার সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান অনিশ্চিত পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করেছেন।
এর আগে শুক্রবার জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া সিকিউরিটি কাউন্সিলে এই হামলার বিষয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন এককভাবে পুরো অঞ্চলে সংঘাতের সূচনা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাহারায় লোহিত সাগর পাড়ি দিচ্ছে বাণিজ্যিক জাহাজ। ছবি: সংগৃহীত
হুতিদের লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ চালানোর ফলে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে লেবানন, সিরিয়া ও ইরাক থেকে ইরানের মিত্র গোষ্ঠীগুলোও যোগ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, হুথিদের হামলার বিষয়ে ইরানকে একটি গোপন বার্তা পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত উল্লেখ না করে তিনি সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমরা গোপন বার্তা পাঠিয়েছি এবং আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতির বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’
ইয়েমেনে হুথিদের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালানোর একদিন পরই যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের একটি রাডার ব্যবস্থার স্থাপনায় নতুন করে হামলার কথা জানিয়েছে।
হুথিদের মুখপাত্র নাসরুলদীন আমের আল জাজিরাকে বলেন, ‘এই নতুন হামলার একটি দৃঢ়, শক্তিশালী ও কার্যকর জবাব দেয়া হবে।’
হুথিদের আরেক মুখপাত্র মোহাম্মেদ আবদুসালাম রয়টার্সকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের চালানো এসব হামলায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোর লোহিত সাগর ও আরব সাগরে চলাচলে বাধা দিতে আমাদের সক্ষমতায় কোনো প্রভাব পড়েনি।’
তবে এর আগে শুক্রবার পেন্টাগন জানায়, হুথিদের লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের চালানো যৌথ হামলায় ভালো প্রভাব পড়েছে।
ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড এক্স-এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সমুদ্রে চলাচলকারী জাহাজগুলোতে হুথিদের হামলার সক্ষমতা ব্যাহত করতে যুক্তরাষ্ট্র ডেস্ট্রয়ার কার্নি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।’
হুথি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্যালেস্টেনিয়ানদেরকে সমর্থনের জন্য সাগরে অভিযান চালাচ্ছে। তবে তাদের হামলা করা অনেক জাহাজের সঙ্গে ইসরায়েলের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ নেই।
ইয়েমেনের পশ্চিম ও উত্তর অংশের বেশিরভাগ এবং সানা নিয়ন্ত্রণকারী হুথিরা লোহিত সাগর ও ইযরায়েলে ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।