সাত দিনের বিরতির পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।
বৃহস্পতিবারের পর আর যুদ্ধবিরতির মেয়াদ না বাড়ার প্রেক্ষাপটে স্থানীয় সময় শুক্রবার গাজাজুড়ে বোমার শব্দ শোনা গেছে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এই হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেও যুদ্ধবিরতির চুক্তির অধীনে ইসরায়েল ৩০ বন্দিকে এবং হামাস ৮ জিম্মিকে ছেড়ে দেয়।
হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের আগের দু দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ছিল ছয় দিন, সেই মেয়াদ শেষ হয় বুধবার। এরপর বৃহস্পতিবার আরও একদিন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
শুক্রবার সকালে গাজা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক আবু আজজুম জানান, এই মুহূর্তে, দক্ষিণ ইসরায়েলি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এটি এমন একটি এলাকা যা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বেসামরিকদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য নিরাপদ বলে সুপারিশ করেছিল।
তিনি বলেন, গত এক ঘণ্টায় আমরা ব্যাপকভাবে ইসরায়েলি বোমা হামলার শিকার হয়েছি।
এমন পরিস্থির আগে অবশ্য ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একজন সিনিয়র উপদেষ্টা মার্ক রেগেভ বৃহস্পতিবার বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক যতদিন পর্যন্ত হামাস জিম্মিদের মুক্তি দিতে থাকবে। হামাসের ওপর চাপ দিতে হবে। যদি তারা জিম্মিদের মুক্তি দিতে থাকে, তাহলে বিরতি চলতে পারে।
তবে শেষ পর্যন্ত আর এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকেনি। যার প্রভাব পড়ল শুক্রবারই। একের পর এক বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
রয়টার্স বলছে, দেড় মাসের বেশি সময় গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পর গত শুক্রবার থেকে সোমবার নাগাদ চার দিনের যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই পক্ষ।
সেই যুদ্ধবিরতি আরও দুই দিন বাড়িয়ে বুধবার পর্যন্ত করতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। পরে তা বাড়ে আরও একদিন। সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে চাপ দিচ্ছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল।
ইসরায়েলে ঢুকে হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।
টানা হামলার শিকার গাজায় খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কদিন আগে মিশরের রাফা ক্রসিং দিয়ে কয়েকটি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে ওই উপত্যকতায়।
এতদিন গাজায় জ্বালানি প্রবেশে ইসরায়েলের অনুমতি ছিল না। বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে সম্প্রতি শুধু হাসপাতাল ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য জ্বালানির অনুমতি দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ঢুকেছে কয়েকটি জ্বালানিবাহী ট্রাক।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজার সীমান্তের বড় অংশই ইসরায়েলের সঙ্গে, বাকিটা মিশরের সঙ্গে। এর দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার এবং প্রশস্ত ১০ কিলোমিটার।