বয়সে সবচেয়ে বড় তাই বিপদেও যেন বড় দায়িত্ব পালন করলেন ভারতের উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকা পড়া গব্বর সিংহ নেগি। সুড়ঙ্গ থেকে একে একে ৪০ জন বেরিয়ে আসার পর, সবার শেষে বেরোলেন তিনি।
মঙ্গলবার রাতে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করার পর উদ্ধারকারীদের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে গব্বর সিংহের প্রশংসা। তাকে নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাকি শ্রমিকরাও।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, ১৭ দিনের বন্দিদশায় বাকিদের যোগাসন শিখিয়েছেন বয়োজ্যেষ্ঠ গব্বর। বিপদ এবং আতঙ্কের মধ্যেও শ্রমিকরা যাতে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকেন, তা সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করে গিয়েছেন তিনি। আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গব্বর। সেখানেই তার প্রাথমিক চিকিৎসা চলছিল।
হাসপাতালের বাইরে থেকেই গব্বরের ভাই জয়মল সিংহ নেগি এনডিটিভিকে বলেন, দাদা বাকিদের বলেছিল, আমি সবার বড়। আমি সবার শেষে সুড়ঙ্গ থেকে বেরোব। দাদা ফিরে আসায় তিনি এবং তাদের পরিবার যে খুশি, সে কথাও জানান জয়মল।
উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গমুখ থেকে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার দূরে উত্তরাখণ্ডের পাওড়ি গঢ়ওয়াল জেলায় গব্বরের বাড়ি। তার সাহসিকতার প্রশংসা শোনা গিয়েছে বড়ির লোকেদের কাছ থেকেও।
প্রথমে পাইপের মাধ্যমে, পরে ফোনের মাধ্যমে কয়েক দিন ধরেই গব্বরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন ভাই জয়মল। তার কথায়, দাদা খুব সাহসী। দাদাকে বললাম, উদ্ধারকাজ শুরু হলে তো হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যাবে। তখন কী করবে? বলল, আমি বড়। আমি সবার শেষে বেরোব।
১৭ দিন পর মঙ্গলবার রাতে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪১ জন শ্রমিককে। সবাই সুস্থ রয়েছেন। তবে দীর্ঘ দিন সুড়ঙ্গে বন্দি থাকার কারণে তাদের মনের উপর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সুড়ঙ্গের বাইরে গড়ে তোলা হয়েছিল অস্থায়ী হাসপাতাল। মঙ্গলবার রাতে সুড়ঙ্গ থেকে বের করার পর শ্রমিকদের সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা চলে।এর পর তাদের ৩০ কিলোমিটার দূরে চিনিয়ালিসৌর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই ৪১টি শয্যা তৈরি ছিল। প্রত্যেক শয্যায় ছিল অক্সিজেনের ব্যবস্থা।