বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘চুক্তি লঙ্ঘনে’ বেঁকে বসল হামাস, বন্দিবিনিময়ে অনিশ্চয়তা

  •    
  • ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:১৭

ইসরায়েলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে পরিস্থিতি ফের আগের পর্যায়ে যাওয়ার শঙ্কা জেগেছে। সেখানকার সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, স্থানীয় সময় রাত নয়টার মধ্যে হামাস বন্দিদের মুক্তি না দিলে আবারও গাজায় বোমা হামলা শুরু করবে ইসরায়েল।

সাত সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসারায়েলের হামলার পর শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে চারদিনের বহুল প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় কার্যক্রম।

বিরতির প্রথম দিন হামাস ২৪ ও ইসরায়েল ৩৯ ফিলিস্তিনি জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার পর শনিবার হামাস ১৪ ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আরও ৪২ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় দিনে এসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জিম্মিদের মুক্তি দিতে বেঁকে বসেছে হামাস। এর ফলে বন্দি বিনিময় কার্যক্রম আবারও চরম অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে।

হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেড ইসরায়েলি গোষ্ঠীকে শর্ত দিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েল যতক্ষণ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দেবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত জিম্মিদের মুক্তি দেবে না তারা।

জিম্মিদের মুক্তি দিতে দেরি করার আরেকটি কারণ হিসেবে কাসাম ব্রিগেড বলেছে, ইসরায়েল জিম্মিদের মুক্তির চুক্তির শর্তাবলী অনুসরণ না করার কারণে তাদের মুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে।

তবে কাসেম ব্রিগেডে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করার মতো কোনো কাজ করেনি।

জিম্মিদের মুক্তির চুক্তিতে উপত্যকায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের বিষয়টিও ছিল বলে ধারণা করছে বিবিসি। গতকাল জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী মোট ১৩৭টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করে। তবে ফিলিস্তিনে রেড ক্রস জানায়, তারা মোট ১৯৬টি ট্রাক রাফা সীমান্ত অতিক্রম করতে দেখেছে।

রাফা সীমান্ত দিয়ে শুক্রবার রেকর্ড সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করে। ছবি: সিএনএন

আজও অন্তত পঞ্চাশটি ত্রাণবাহী ট্রাক জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে গাজায় প্রবেশ করেছে বলে দাবি ইসরায়েল সরকারের আঞ্চলিক সমন্বয়কারীর।

তবে হামাসের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বিবিকে জানিয়েছেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে ১০০ ট্রাক প্রবেশের কথা থাকলেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মাত্র তিনটি ট্রাক সীমান্ত অতিক্রম করেছে। বাকিগুলো আটকে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া যুদ্ধবিরতির সময় কোনো প্রকার আগ্রাসন চালানো বন্ধ থাকার কথা থাকলেও তারা (ইসরায়েল) গাজার দক্ষিণাঞ্চলে সামরিক ড্রোন উড়িয়েছে।

এ ছাড়াও ফিলিস্তিনিদের মুক্তির তালিকায় বড় পরিবর্তন আনার কথাও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, গাজার বাইত হানুন এলাকায় ইসরায়েল বাহিনী দুই ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।

ওই অঞ্চলে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির অপেক্ষায় সীমান্তে অবস্থান নেয়া স্বজনদের ওপর ড্রোন থেকে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। ওফার কারাগারের পাশে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সংবাদমাধ্যমটির সাংবাদিক নিদা ইব্রাহীম বলেছেন, গতকালের তুলনায় আজ এখানে লোকের ভীড় কম। এখানকার জনতা এখনও জানে না, ঠিক কতজন বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে। এমনকি কারা মুক্তি পাচ্ছেন, তাদের নামও প্রকাশ করা হয়নি।

হামাসের বিবৃতির পর ইসরায়েলেও উত্তেজনা দেখা গেছে। তেল আবিবে ইসরায়েলের মিলিটারি হেডকোয়ার্টারের সামনে হাজার হাজার ইসরায়েলি জড়ো হয়েছেন। জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার দাবিতে তারা সেখানে স্লোগান দিচ্ছেন।

তেল আবিবে উত্তেজনা। ছবি: এক্স

ইসরায়েলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে পরিস্থিতি ফের আগের পর্যায়ে যাওয়ার শঙ্কা জেগেছে। সেখানকার সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, স্থানীয় সময় রাত নয়টার মধ্যে হামাস বন্দিদের মুক্তি না দিলে আবারও গাজায় বোমা হামলা শুরু করবে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, শনিবার মধ্যরাতের আগে জিম্মিদের মুক্তি না মিললে আবারো উপত্যকায় হামলার প্রস্ততি নেবে তারা।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ-এর কলামিস্ট গিডিয়ন লেভি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি ভেঙ্গে গেলে তা দুপাশের বন্দিদের পরিবারগুলোর জন্যই হবে ভয়ঙ্কর।

এর আগে সবকিছু ঠিকঠাকই এগুচ্ছিল। প্রথম দিন শর্তানুযায়ী দুপক্ষ জিম্মিদের মুক্তি দেয় এবং ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে এক দিনে রেকর্ড পরিমাণ ত্রাণবাহী ট্রাক উপত্যকায় প্রবেশ করতে দেয় ইসরায়েল। শুধু তাই নয়, দিনের শুরুতে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্ততা করা মিসর জানিয়েছিল, এ বিরতির মেয়াদ আরও এক-দুই দিন বাড়তে পারে। দুপক্ষের কাছ থেকেই এমন ইঙ্গিত মিলেছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসে বিমান হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৪০০ ইসরায়েলির নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৪ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বহু কাঠখড় পোড়ানোর পর দুপক্ষ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও তা আবার ভেস্তে যেতে বসেছে।

এ বিভাগের আরো খবর