ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় খাবার ও বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্য ঢোকা বন্ধের হুমকির পর এবার পাল্টা হুমকি দিয়েছে হামাসও। এ উপত্যকায় ইসরায়েল সতর্কতা ছাড়াই যদি বেসামরিক লোকদের বাড়িঘরে কোনো হামলা চালায় তাহলে তাদের হাতে থাকা বন্দিদের হত্যা করা হবে বলে গাজার শাসক দলটি ঘোষণা দিয়েছে।
হামাসের মুখপাত্র আবু উবাইদা বলেছেন, সতর্কতা ছাড়াই বেসামরিক বাড়িতে প্রতি ইসরায়েলি বোমা হামলার জন্য একজন ইসরায়েলি বন্দিকে মৃত্যুদণ্ড দেবে হামাস এবং এই মৃত্যুদণ্ড সম্প্রচারও করা হবে।
এই হুমকির বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন জানিয়েছেন, আন্তঃসীমান্ত আক্রমণের সময় হামাসের হাতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ বন্দি হয়ে আছেন।
হামাস ও ইসরায়েলের এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বহু মানুষ বন্দি অবস্থায় আছে, গৃহহীন হয়ে পড়েছেন অনেকে।
ইসরায়েলি টিভি চ্যানেলগুলো বলছে, হামাসের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। কমপক্ষে ২ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকজনকে বন্দি করা হয়েছে।
আর গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার থেকে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৬৮৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩ হাজার ৭২৬ জন আহত হয়েছে।
গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাস গত ৭ অক্টোবার সকালে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালালে প্রাথমিক পর্যায়ে ৪০ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়। এরপর নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। পরে পাল্টা বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলও। দুই পক্ষই ব্যাপক সংঘর্ষে জড়ায়।
এরই মধ্যে ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারা ব্যাপক বিমান হামলা চালাচ্ছে। এক পর্যায়ে সোমবার গাজায় পানি, খাবার, জ্বালানি, ওষুধ ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধের হুমকি দেয় ইসরায়েল।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজা উপত্যকার সীমান্তের বড় অংশই ইসরায়েলের সঙ্গে, বাকিটা মিশরের সঙ্গে। এর দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার এবং প্রশস্ত১০ কিলোমিটার। প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বসবাস করছে গাজায়।
২০০৭ সালে হামাস প্রতিদ্বন্দ্বী ফিলিস্তিনি বাহিনীর কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে ইসরায়েল এবং মিশর গাজার ওপর বিভিন্ন স্তরের অবরোধ আরোপ করে রেখেছে।