হিজাব পরেই মুসলিম নারী খেলোয়াড়রা বিশ্বের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া আসর অলিম্পিকে অংশ নিতে পারবেন বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি।
আগামী বছরের জুলাইয়ে প্যারিসে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক আসরে নিজ দেশের খেলোয়াড়দের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ফ্রান্স। স্বাগতিক দেশের এ সিদ্ধান্তের পরের দিন অলিম্পিক কমিটি এর বিপরীত সিদ্ধান্তের কথা জানায় বলে শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী এমিলি কাসতেরা গত রোববার ধর্মনিরপেক্ষতার কারণ দেখিয়ে প্যারিস অলিম্পিকে ফ্রান্সের নারী মুসলিম খেলোয়াড়দের হিজাব নিষিদ্ধের পক্ষে যুক্তি দেখান।
যদিও অলিম্পিক কমিটির একজন মুখপাত্র মন্ত্রীর এ মন্তব্যকে সরাসরি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘অলিম্পিক ভিলেজে শুধু অলিম্পিক কমিটির নিয়মই চলবে। আর আমরা হিজাবসহ প্রত্যেক ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
যেকোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা তার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়মেই চলে বলে জানান তিনি।
ফ্রান্সের ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘যদিও এ আইনটি শুধু ফ্রান্সের নারী খেলোয়ারদের জন্য করা হয়েছিল, তবে এখানে সবাইকে একইভাবে সুযোগ দিতে হবে।’
৩২টি ভিন্ন ইভেন্টে প্রায় ১০ হাজার খেলোয়াড় অলিম্পিক আসরে অংশ নেবেন, যেখানে তারা পারস্পরিক সংস্কৃতি বিনিময় করবেন বলে জানান এ মুখপাত্র।
ফ্রান্সের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ
এদিকে হিজাব নিষিদ্ধ নিয়ে ফ্রান্সের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির মুসলিমদের সংগঠন ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা পক্ষগুলো। তাদের ভাষ্য, ফ্রান্স প্রশাসন এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুসলিম নারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের পাশাপাশি তাদের হেনস্তার সুযোগ করে দিচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরে ফ্রান্সের নতুন এ হিজাববিরোধী আইনটি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে।
ইউরোপে ফ্রান্সেই সংখ্যালঘু হিসেবে সর্বোচ্চ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস। যদিও প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা আইন জারি করে চলেছে।
ফ্রান্সে ইসলামি মতাদর্শ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ইতোপূর্বে মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন মাখোঁ। এ ছাড়াও মাঁখোর আমলে মহানবীকে (সা.) নিয়ে সাময়িকীতে অবমাননাকর কার্টুন প্রকাশ ও ইসলাম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আরবসহ মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদ ও পণ্য বর্জনের ঘটনা ঘটেছিল।