অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে কোম্পানির বড় অংশের শেয়ার বিক্রি হওয়ার প্রেক্ষাপটে জাপানের শেয়ার বাজার থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছে দেশটির প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তোশিবা।
এর মাধ্যমে তোশিবার ৭৪ বছরের শেয়ার বাজারের ইতিহাস শেষ হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
কোম্পানিটি বলছে, প্রাইভেট ইক্যুইটি ফার্ম জাপান ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্টনারস (জেআইপি)-এর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ তোশিবার ৭৮.৬৫ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছে। অর্থাৎ গ্রুপটি দুই-তৃতীয়াংশের বেশি অংশীদারিত্বের মালিকানা পেয়েছে।
ঘড়ি এবং যান্ত্রিক পুতুলের নির্মাতা হিসেবে ১৮৭৫ সালের দিকে বাজারে আসে তোশিবা। এর পর নানা পণ্য উৎপাদন শুরু করে এই কোম্পানি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তোশিবার সঙ্গে হওয়া নতুন চুক্তির অধীনে এ বছরের শেষের দিকে কোম্পানিটির বকি শেয়ার বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হতে পারে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই বাজার থেকে সরার পথে তোশিবা। এর অংশ হিসেবে ২০২০ সালে ল্যাপটপ ব্যবসা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে তখন জানানো হয়, তারা ৩৫ বছরের পুরোনো ল্যাপটপ ব্যবসা থেকে সরে যাবে। এ ব্যবসার শেয়ার বিক্রি করার কথা বলা হয় জাপানি প্রতিষ্ঠান শার্পের কাছে।
বিবিসি বলছে, জাপান যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেরিয়ে আসছে এবং টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জ পুনরায় চালু হলো তখন ১৯৪৯ সালের মে মাসে তোশিবার শেয়ারের ব্যবসা শুরু হয়।
বাসা-বাড়ির ইলেকট্রনিক্স পণ্য থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও ছিল এই তোশিবার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কয়েক দশক ধরে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং এর উচ্চ প্রযুক্তি শিল্পের প্রতীক ছিল।
তবে গত কয়েক বছর ধরে বেশ বিপাকে পড়েছে তোশিবার ব্যবসা। ২০১৭ সালে যুক্তরষ্ট্রে পারমাণবিক শক্তি ব্যবসায় বড় ক্ষতির কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি। দেউলিয়া হওয়া এড়াতে তোশিবা ২০১৮ সালে এর মেমরি চিপ ব্যবসা বিক্রি বন্ধ করে দেয়।
তোশিবা ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের প্রাইভেট ইক্যুইটি গ্রুপ সিভিসি ক্যাপিটাল পার্টনারদের কাছ থেকে পাওয়া বিনিয়োগের বেশ কয়েকটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। তবে শেষ পর্যন্ত অস্তিত্বের প্রশ্নে অনেকটাই আপস করতে হয় প্রতিষ্ঠানটিকে।