বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধি ও ডলারের তুলনায় রুপির মূল্য কমার প্রেক্ষাপটে পেট্রল ও ডিজেলসহ জ্বালানির দাম আরও বাড়াচ্ছে পাকিস্তান।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই নতুন দর কার্যকর হতে পারে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
অর্থনীতি ও রাজনীতিসহ নানা সংকটে ডুবছে এশিয়ার এই দেশ। খাবারের দাম বাড়া, বিদ্যুৎসংকট, মূল্যস্ফীতি এসব নিয়েই চলতে হচ্ছে নাগরিকদের।
পাকিস্তানের তেল-গ্যাস নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড ওয়েল ও রুপির মূল্য নিয়ে বিবেচনার পর পেট্রল ও ডিজেলসহ সব জ্বালানির দাম ঘোষণা করবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পেট্রলেরর দাম লিটারে ১৬ ও হাই স্পিড ডিজেলের দাম ১৩.৬৬ রুপি বাড়ানো হতে পারে। এ হিসাবে পেট্রল হবে ৩২১ রুপি আর হাই স্পিড ডিজেল বিক্রি হবে ৩২৬ রুপিতে।
দাম বাড়ানো হচ্ছে কেরোসিন ও লাইট ডিজেল ওয়েলেরও। এই দুই জ্বালানি দাম যথাক্রমে ১০ ও ৫ রুপি করে বাড়ছে।
একজন শিল্প কর্মকর্তা বলেছেন, যদি রুপির দাম বাড়ে তখন জ্বালানির দামের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে বিশ্বজুড়ে যেভাবে জ্বালানির দাম বাড়ছে, তাতে দেশে দাম কমার জন্য এটি যথেষ্ট নয়।
দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। ২০তম প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতির পর আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি এ দেশের অর্থনীতি। নওয়াজের কাছ থেকে বিপুল বৈদেশিক ঋণের বোঝা নিয়ে ক্ষমতায় আসেন শহীদ খাকান আব্বাসি। সংকট কাটাতে ব্যর্থ হন তিনিও।
পূর্বসূরিদের রেখে যাওয়া বিপুল ঋণ নিয়ে পাকিস্তানের মসনদে আসেন ইমরান খান। সৌদি আরব এবং চীনের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে কোনোভাবে পাকিস্তানকে টেনে নিচ্ছিলেন ইমরান। তবে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে তিনিও থিতু হতে পারেননি।
ইমরানকে সরিয়ে এরপর ক্ষমতায় আছেন নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরিফ। তার নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার জোর গলায় বলছেন, ‘পাকিস্তান খেলাপি হবে না।’ তবে বর্তমান প্রেক্ষাপট তার দাবিকে সমর্থন করছে না।
ডন লিখেছে, পাকিস্তানের ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। বর্তমান অর্থনীতির সবদিক বিবেচনা করে পাকিস্তান ডিফল্টের (দেউলিয়া) খুব কাছাকাছি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে হু হু করে। বিদেশি ঋণ কিছুটা এলেও সংকট দূর হচ্ছে না পাকিস্তানের।