ভূমধ্যসাগরীয় প্রলয়ংকরী ঝড় ‘দানিয়েল’-এর আঘাতে বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট বন্যায় লিবিয়ার পূর্ব উপকূলীয় শহর দারনায় পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ বাংলাদেশি রয়েছেন বলে জানা গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বুধবার জানায়, এ দুর্যোগে নিখোঁজ হয়েছেন কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ। বন্যায় ভেসে গেছে অনেক ভবন; নিশ্চিহ্ন হয়েছে শহরের এক-চতুর্থাংশ এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয় সময় ১০ সেপ্টেম্বর রাতে লিবিয়ার ত্রিপলী শহর থেকে ১৩৪০ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দূরবর্তী উপকূলীয় শহর দারনায় সাইক্লোন দানিয়েল আঘাত হানে। এতে দেশটির বেনগাজী, আল-মারজ, শাহাত, আল-বাইদা এবং দারনা শহর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহরের সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তারিক আল-খারাজের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সাইক্লোনে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যুর এই সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, উপকূলীয় শহর দারনায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অবস্থা জানার জন্য ত্রিপলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, আইসিআরসি ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
দারনা হাসপাতালে কর্মরত বাংলাদেশি একজন নার্সের মাধ্যমে পাওয়া খবরে জানা যায়, ওই শহরে সাইক্লোন ‘দানিয়েল’-এর আঘাতে ৬ বাংলাদেশি নাগরিক মারা গেছেন। তাদের মধ্যে চারজনের নাম-ঠিকানা জানা গেছে। তারা হলেন- রাজবাড়ী জেলার শাহীন ও সুজন এবং নারায়ণগঞ্জের মামুন ও শিহাব।
অপর দুজনের বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, এলাকাটি দুর্যোগকবলিত হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় মারা যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের মরদেহ সংরক্ষণ এবং আটকেপড়া বাংলাদেশি প্রবাসীদের উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসন, আইসিআরসি ও আইওএম-এর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
এছাড়াও মারা যাওয়া অজ্ঞাত দুই বাংলাদেশির নাম ও ঠিকানা জানার জন্য দূতাবাস থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
দুর্যোগকবলিত এলাকায় সরেজমিনে যাওয়ার জন্য ত্রিপলিতে লিবিয়া সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছে দূতাবাস। অনুমতি পেলেই দূতাবাস থেকে একটি প্রতিনিধি দল দুর্যোগকবলিত ওই উপকলীয় এলাকায় যাবে। সে জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।