দীর্ঘ ১২ বছর স্ত্রীকে বন্দি করে রাখার অভিযোগে ৫৫ বছর বয়সী এক জার্মান নাগরিককে আটক করেছে ফ্রান্সের পুলিশ।
সোমবার মাথা কামানো অবস্থায় ভুক্তভোগী ওই নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় তার অ্যাপার্টমেন্টের বেডরুম থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। সেসময় তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল যা দেখে ধারণা করা হয়, তিনি বিভিন্ন সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
৫৩ বছর বয়সী ওই ভুক্তভোগী নারী অপুষ্টিতে ভুগছিলেন বলে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ফরাসি পুলিশের একটি সুত্র জানায়, ভুক্তভোগী কোনোভাবে ফোন ব্যাবহার করার সুযোগ পান এবং তিনি জার্মানির ভিসবাডেনে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে জার্মানির পুলিশ ফ্রান্স পুলিশের দপ্তরে বিষয়টি অবহিত করলে তারা ওই নারীকে উদ্ধারের পদক্ষেপ নেয়।
তবে স্ত্রীকে আটকে বা বন্দি করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তার স্বামী। পুলিশকে তিনি জানান, তার স্ত্রী ক্যান্সার আক্রান্ত। তিনি (স্ত্রী) নিজেই নিজের যত্ন নিচ্ছিলেন।
ভুক্তভোগী নারীর শারীরিক পরীক্ষার পর ফ্রান্সের ফরেনসিক মেডিসিন সার্ভিসের রিপোর্ট দেখে স্থানীয় প্রসিকিউটর অলিভিয়ে গ্লাদি বলেন, ‘তার অবস্থা ভালো নয়। তবে তার হাড়ে কোনো চিড় বা শরীরে কোনো ক্ষত পাওয়া যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রক্ত পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তিনি পানিশূন্যতায় ভুগছিলেন না। তবে তার রক্ত প্রবাহ মোটেও স্বাভাবিক ছিল না।’
মানসিক বিকলতা ও সঠিক যত্নের অভাবে এমনটি হতে পারে বলে জানান তিনি।
আলিসিয়া নামের ওই দম্পতির এক প্রতিবেশীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ভুক্তভোগীর নারীর স্বামী গত ১০ বছর ধরে সবাইকে জানিয়ে আসছেন, তার স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত।
তিনি বলেন, ‘আমি কখনও তার স্ত্রীকে দেখিনি। কারণ, তিনি কখনও ঘর থেকে বেরই হতেন না।’
ফ্রান্সের গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃত লোকটিকে অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে আটক করেছেন তারা। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।