রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, উগ্রপন্থায় মদদ ও অর্থায়ন এবং একটি উগ্রপন্থি সংগঠন প্রতিষ্ঠার অভিযোগে করা মামলায় নাভালনিকে শুক্রবার নতুন করে এ সাজা দেয়া হয়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘কট্টরতম সমালোচক’ হিসেবে পরিচিত নাভালনি মোট সাড়ে ১১ বছর কারাদণ্ড ভোগ করছেন। জালিয়াতি ও অন্যান্য অভিযোগে তাকে এই কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
নাভালনি ও তার সমর্থকরা এসব অভিযোগ ভুয়া বলে দাবি করে আসছেন। তার রাজনৈতিক আন্দোলনকে চরমপন্থি হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মস্কো থেকে ১৪৫ মাইল পূর্বে মেলেখোভো অঞ্চলের একটি আদালত শুক্রবার নাভালনির বিরুদ্ধে আনা ছয়টি আলাদা অভিযোগের বিচার শেষে রায় ঘোষণা করে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে উসকানি, চরমপন্থি কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন ও চরমপন্থি সংগঠন গড়ে তোলা।
নাভালনির রুদ্ধদ্বার বিচার হয়েছে আইকে-৬ পেনাল কলোনিতে। তাকে রাখা হয় মস্কো থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পূর্বে কড়া নিরাপত্তা সংবলিত জেলে।
নাভালনির টিম জানিয়েছে, বিচারক চলমান সাজার সঙ্গে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড যোগ করেছেন। রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটর ২০ বছর কারাদণ্ডের আবেদন করেছিলেন।
সাজা ঘোষণার পরে নাভালনির পক্ষ থেকে ফেসবুক পোস্টে জনতার উদ্দেশে বলা হয়, ‘তারা (সরকার) আপনাদের ভয় দেখাতে চায় এবং আপনাকে প্রতিবাদ করার ইচ্ছা থেকে বঞ্চিত করতে চায়। ক্ষমতা দখলকারী, বিশ্বাসঘাতক এবং চোর একটি দলের কাছে লড়াই না করেই রাশিয়াকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আপনারা প্রতিবাদ করার ইচ্ছা হারাবেন না।’
এই রায়ের বিষয়ে নাভালনি বলেন, ‘আরও ১৯ বছর আমাকে জেলে থাকতে হবে। আমার কাছে সংখ্যা কোনো ব্যাপার নয়।
‘আমি পুরোপুরি বুঝতে পারি যে, অনেক রাজনৈতিক বন্দির মতো আমিও যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছি।’
রায়ের পরপরই যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো কড়া নিন্দা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ রায়কে ‘অন্যায় বিচার’ বলে অভিহিত করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন একে ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায়’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। জোটটি অবিলম্বে নাভালনির মুক্তির দাবি জানিয়েছে।