চালের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই নিত্যপণ্য রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত।
দেশটির সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ জুলাই থেকে বাসমতী ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রপ্তানি বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সরকার বলেছে, বর্ষা মৌসুমে ভারি বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আবার গত এক মাসে দেশের অভ্যন্তরে খুচরা বাজারে চালের দাম ৩ শতাংশ বেড়েছে।
ভারতের এ সিদ্ধান্তের কারণে নতুন করে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ কমার্সের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চাল রপ্তানি বন্ধের এ সিদ্ধান্ত ২০ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। তবে রপ্তানির উদ্দেশে যেসব প্রক্রিয়া চলমান, তা ৩১ আগস্টের মধ্যে সম্পন্ন করা যাবে। এ ছাড়া কোনো দেশের সরকার যদি তাদের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য চাল রপ্তানির অনুরোধ করে, তাহলে ভারত সরকার বিশেষভাবে অনুমতি দিতে পারবে।
বিশ্ববাজারে চাল রপ্তানির ৪০ শতাংশের বেশি করে ভারত। তাদের চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর অন্য কোনো দেশ থেকে সরবরাহ কমলেই খাদ্যের মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে, যা কি না রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এমনিতেই বেশি রয়েছে।
ভারতের খাদ্য মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ স্থিতিশীল ও মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে চাল রপ্তানির নীতিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার। এতে আরও বলা হয়, গত এক বছরে ভারতের খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ।
গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ভারত ২ কোটি ২০ লাখ টন চাল রপ্তানি করে। তার মধ্যে নন-বাসমতী সাদা ও ভাঙা চাল ছিল প্রায় এক কোটি টন। যদিও দেশটির সরকার পরিষ্কার করেছে, আধা সেদ্ধ চাল এ নিষেধাজ্ঞায় পড়বে না। গত বছর ভারত ৭৪ লাখ টন আধা সেদ্ধ চাল রপ্তানি করেছে।
রয়টার্স বলছে, আগামী বছর ভারতে লোকসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখেই খাদ্যের মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল হিসেবে চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে চাল রপ্তানি সীমাবদ্ধ করার পর গম রপ্তানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছিল তারা।
ভারতের চাল রপ্তানিকারকদের সংগঠন রাইস এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বি ভি কৃষ্ণা রাও বলেন, হঠাৎ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা অনেক দেশের ক্রেতার জন্য বড় সমস্যার কারণ হবে।
তিনি জানান, ভারত থেকে চাল কেনার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে বেনিন, সেনেগাল, আইভরি কোস্ট, টোগো, গিনি, বাংলাদেশ ও নেপাল।