বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২২ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে ‘ব্রেন ডেথ’ রোগীর দুই হাত আরেকজনের শরীরে প্রতিস্থাপন

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৬ জুলাই, ২০২৩ ১৩:১২

হাসপাতাল সূত্র বলছে, শনিবার ভোর ৫টা থেকে শুরু হয়েছিল অস্ত্রোপচার। শেষ হয় রোববার ভোর ৩টার দিকে। একটানা ২২ ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। এই সেবা দিতে চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী মিলিয়ে ৩২ জনের মেডিক্যাল টিম গঠন করে হাসপাতাল।

কিডনি বা অন্য অঙ্গের মতো ‘ব্রেন ডেথ’ এক ব্যক্তির দান করা দুটি হাত এবার প্রতিস্থাপন করা হলো এক যুবকের শরীরে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতাল বা এসএসকেএম হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, শনিবার ভোর ৫টা থেকে শুরু হয়েছিল অস্ত্রোপচার। শেষ হয় রোববার ভোর ৩টার দিকে। একটানা ২২ ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। এই সেবা দিতে চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী মিলিয়ে ৩২ জনের মেডিক্যাল টিম গঠন করে হাসপাতাল।

২৭ বছরের যুবকের দান করা হাত দুটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বিদ্যুতের কাজ করতে গিয়ে হাত হারানো এক যুবকের শরীরে। তাকে আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

অনেকে বলছেন, অঙ্গ প্রতিস্থাপনের নজির কলকাতার নানা সরকারি হাসপাতালে আছে। কিন্তু ব্রেন ডেথ রোগীর হাত অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন এটা বিরলতম। ফলে চিকিৎসা জগতের পাশাপাশি রাজ্যের মানুষের কাছে বড় খবর এখন এটাই।

গত ৯ জুলাই গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়ে যান পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়ার রাজপুর করাতবেরিয়ার বাসিন্দা হরিপদ রানা। তাকে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল উলুবেড়িয়া থেকে।

১৩ জুলাই হরিপদ রানার ‘ব্রেন ডেথ’ হয়। তখন তার পরিবারের সদস্যদের মরণোত্তর অঙ্গদান সম্পর্কে বোঝান চিকিৎসকরা। হরিপদর রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় আর এক যুবকের। যিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তখনই হাত দানের গুরুত্বও বোঝানো হয় পরিবারের সদস্যদেরকে।

হরিপদ রানার ভাইপো দেবকুমার বলেন, ‘আমরা বিষয়টিতে রাজি হলাম। কারণ কাকার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। তাই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও হাত যদি অন্য রোগীদের জীবন দান করতে পারে সেটা তো ভালই। কাকিমাও রাজি ছিলেন।’

এক যুবক প্রায় এক বছর আগে বিদ্যুতের শকে ঝলসে যান। তার জেরে ওই যুবকের ডান হাত বাদ দিতে হয়। তবে প্রতিস্থাপনের কথা মাথায় রেখে শিরা, ধমনী, স্নায়ু ও টেন্ডন ঠিক রেখে কোমর থেকে মাংস নিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। তারপর এমন সুযোগ আসায় ওই ব্যক্তির হাত যুবকের শরীরে প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মেডিক্যাল বোর্ডের ছাড়পত্রও নেয়া হয়।

‘রিজিওনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনে নাম নথিভুক্ত করা হয়। আর শুক্রবারই কলকাতার বিরাটির ওই যুবককে এসএসকেএম হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তারপর সব প্রক্রিয়া ও অনুমতি মেলার পর ভোর ৫টা থেকে কাজ শুরু হয়। হরিপদর দুটি হাতই কনুইয়ের কিছুটা উপর থেকে কেটে নেয়া হয়। আর তা আরেক যুবকের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।

এই কাজে প্রথমে মৃতের পরিবার রাজি হলেও পরে পিছিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মৃতের স্ত্রী অনড় সিদ্ধান্ত নেয়ায় অবশেষে নবজীবন পেলেন ওই যুবক।

এই প্রতিস্থানের পর কয়েকটি দিন কড়া পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে রোগীকে। কারণ এটি অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মতো নয়।

এ বিভাগের আরো খবর