কারাগারে পরিচয়, সে পরিচয় গড়িয়েছে প্রেমে। সম্পর্কটাকে স্থায়ী করতে তাই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দুই কয়েদি। অবশেষে এ আশা পূরণ হয়েছে তাদের।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমানের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকা ওই দুই আসামির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বুধবার সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
আবদুল হাসিম ও শাহানারা খাতুনের চার হাত এক করার দায়িত্ব নেয় মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি। জেলার মন্তেশ্বরের কুসুম গ্রামে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
হাসিমের বাড়ি আসামের দোরাং জেলার দলগাঁও থানা এলাকার রঙ্গনগারোপাথার গ্রামে। আর শাহানারার বীরভূম জেলার নানুর থানার উচকারণ-বালিগড়ির বাসিন্দা।
মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদের তথ্য অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলায় হাসিম ৮ বছর ও খুনের মামলায় শাহানারা ৬ বছর ধরে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। সেখানেই হাসিমের সঙ্গে পরিচয় হয় শাহানারার। পরিচয় গড়ায় প্রেমে।
দম্পতি পরিচয় পেয়ে খুশি দুজনেই। তবে মুক্তি না-মেলা পর্যন্ত শ্রীঘরবাসী হয়েই থাকতে হবে নবদম্পতিকে। প্যারোলে মুক্তি পাওয়া দুজনকে ১৬ জুলাই আবার কারাগারে যেতে হচ্ছে।
হাসিম ও শাহানারা জানান, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দিদশাতেই তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারপর তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। তাতে তাদের দুজনের পরিবারের কেউই আপত্তি করেনি।
বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য তারা মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। হাসিমের বাবা আবদুস সাত্তার নিজে তার বন্দি মেয়ের ইচ্ছার কথা মানবাধিকার সংগঠনকে জানান। এ বিষয়ে অনুমতি দেয়ার জন্য তিনি গত ১৬ জুন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির দ্বারস্থ হন।
আবেদন মঞ্জুর হতেই শুরু হয় আবদুল হাসিম ও শাহানারা খাতুনের চার হাত এক করার প্রক্রিয়া। মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে আইনিভাবে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিয়ের পর দাম্পত্য সুখের সন্ধানে বুধবারই তারা বীরভূমের উদ্দেশে পাড়ি দেন। যাওয়ার সময় নবদম্পতি বলে যান, ‘কপাল দোষে শ্রীঘরবাসী হয়েছি। এখন আমরা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছি। মুক্তি পেয়ে গেলে সুখের সংসার গড়ব।’
মানবাধিকার সংগঠনের কার্যকর্তা শামসুদ্দিন শেখ বলেন, ‘আবদুল ধর্ষণের মামলা ও শাহানারা খুনের মামলায় বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন। তারা দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিলেন। তা নিয়ে তাদের পরিবার কারামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিল। আবেদন মঞ্জুর হলে তারা প্যারোলে মুক্তি পান। তবে ১৬ জুলাই ফের তাদের সংশোধনাগারে ফিরে যেতে হবে।’