মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত কোনো বাহিনী তাদের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক।
সোমবার নিউইয়র্কে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের প্রধান জ্যঁ-পিয়েরে লাখ্রোয়াঁ সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে আসেন। তার সফরের আগেই একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন তার প্রতি আহ্বান জানায় যাতে তিনি বাংলাদেশ সফরের সময় বাংলাদেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেন।
যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অপরাধে জড়িত থাকবে তাদেরকে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে নিষিদ্ধ করার আহ্বানও তুলেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
এ নিয়ে জাতিসংঘের অবস্থান কি- ব্রিফিংয়ে তা জানতে চান এক সাংবাদিক।
উত্তরে ফারহান হক বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান হলো- শান্তিরক্ষা মিশনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করে থাকি। যে দেশের সদস্যই হোক না কেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত না থাকে, আমরা এটা নিশ্চিত করে থাকি।’
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়ের লাখ্রোয়াঁর ঢাকা সফরের সময় মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা বাংলাদেশের পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) আমন্ত্রণে নৈশভোজে যোগ দেয়ার বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে ফারহান হক বলেন, ‘যারা শান্তিরক্ষী নিয়ে কাজ করেন, তাদের মূল ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেছেন জ্যঁ-পিয়ের লাখ্রোয়াঁ। কিন্তু আগে যেমনটি বলেছি, আমাদের নীতি হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত কোনো বাহিনীর সঙ্গে জাতিসংঘ সম্পৃক্ত হয় না।’
২৫-২৬ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক সফল হওয়ায় বাংলাদেশ, কানাডা ও উরুগুয়েকে ধন্যবাদ জানান লাখ্রোয়াঁ।
তিনি বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আরও বেশি নারীদের আরও বেশি অংশগ্রহণ ও সাফল্য লাভের উদ্দেশ্যে আমরা কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারি- সে বিষয়ে ঢাকায় গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে।’
শান্তিরক্ষায় নারী বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় শান্তিরক্ষা, বিশেষ করে মিশনে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতিশ্রুতির জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান লাখ্রোয়াঁ।
তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করারও সুযোগ পান।
তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষায় সবচেয়ে (জাতিসংঘ) মিশনে বেশি সৈন্য নিয়োজিত থাকায় বাংলাদেশের সমর্থনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল শান্তিরক্ষী যাতে নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশে উন্নতি করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কার্যকর কৌশল অন্বেষণের জন্য উন্মুখ।’
ঢাকায় থাকাকালীন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল ফর পিস অপারেশনস জ্যঁ-পিয়েরে লাখ্রোয়াঁ এবং ইউএন আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল ফর ম্যানেজমেন্ট স্ট্র্যাটেজি, পলিসি অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স ক্যাথরিন পোলার্ড নারী শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ও প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।