দর্শনার্থীদের আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে যাওয়া সাবমেরিনটিতে আরোহীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে এসেছে, তবে আশা যে একেবারে নেই; তা নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর পারমাণবিক সাবমেরিনের সাবেক কমান্ডার ডেভিড মার্কুয়েট এ কথা জানিয়েছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার জানানো হয়।
যে পরিমাণ অক্সিজেন এই সাবমেরিনে আছে, তাতে পাঁচ আরোহীর সবমিলিয়ে ৯৬ ঘণ্টা বেঁচে থাকার কথা। সে হিসেবে তাদের বৃহস্পতিবারই অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার কথা।
ডেভিড মার্কুয়েট বলেছেন, প্রাণের আশা একেবারেই কম। তবে উদ্ধারকারী সরঞ্জাম যেহেতু সাবমেরিনটির হয়তো কাছাকাছি আছে, সে ক্ষেত্রে প্রাণের আশা আছে।
এর আগের দিন সাবমেরিন টাইটান নিখোঁজ হওয়ার এলাকা থেকে বিকট শব্দ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন কানাডার উদ্ধারকারীরা। তবে বিমান থেকে শোনা ওই শব্দ যে সাবমেরিনটি থেকেই এসেছে তা নিশ্চিত নন মার্কুয়েট।
তিনি বলেন, আমার মনে হয় না এটি সাবমেরিনের শব্দ। এটি প্রাকৃতিক শব্দও হতে পারে। অনেক জাহাজই তো সাগরে আসছে, এ শব্দ এগুলোরও হতে পারে।
গত ১৮ জুন কানাডার কাছাকাছি এলাকায় যাত্রা শুরুর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর সাবমেরিন টাইটানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে ২১ ফুট দীর্ঘ এই জলযানটির সাধারণত দুই ঘণ্টা সময় লাগে।
এর মালিকানায় থাকা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওশানগেট বলছে, এতে থাকা পাঁচ আরোহীকে খুঁজতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চলছে।
১৯১২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করা টাইটানিক এক হিমশৈলির সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। ওই সময়ের সবচেয়ে বড় এ জাহাজটিতে থাকা ২ হাজার ২০০ যাত্রীর ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মারা যান। এর অনেক বছর পর ১৯৮৫ সালে আটলান্টিকের তলদেশে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়।
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিন টাইটান সাগরের তলদেশে আট দিনের ভ্রমণের জন্য জনপ্রতি নিয়েছে দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার। পানির নিচে এটি চার দিনের অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারি সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নৌবাহিনী এবং বাণিজ্যিক গভীর সমুদ্র সংস্থাগুলো উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছে। সর্বশেষ স্থানীয় সময় বুধবার টাইটান যে এলাকায় এটি নিখোঁজ হয়েছে সেখান থেকে এক ধরনের বিকট শব্দ শোনা যায়।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটারজুড়ে ও পানির আড়াই মাইল গভীরতা পর্যন্ত টাইটানের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।