পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান পুনরায় গ্রেপ্তারের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বুধবার রাতে এক টুইট বার্তায় এই শঙ্কা প্রকাশের পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘পুলিশ আমার বাড়ি ঘিরে রেখেছে। সম্ভবত এটিই আমার শেষ টুইট।
কয়েকদিন আগেই ইমরান জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ইমরান। বুধবার এই টুইট বার্তার কয়েক ঘণ্টা আগে ৩১ মে পর্যন্ত ইমরান খানের জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ইসলামাবাদের হাইকোর্ট। বর্তমানে তিনি লাহোরে জামান পার্কের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এই বাসভবন থেকে বুধবার পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থক ও দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দেন ইমরান খান। ওই সময় পাঞ্জাব পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্যকে ওই বাড়ির আশপাশে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
পুলিশের উপস্থিতির একটি ভিডিও শেয়ার করে ইমরান অপর এক টুইটে বলেন, ‘আমি জাতির উদ্দেশে বক্তব্য দেয়ার সময় আমার বাড়ির বাইরের দৃশ্য।’
এর আগে পুলিশের বেশ কয়েকটি দল সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করে। সেখানে উপস্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে ইমরান খানের শেয়ার করা ভিডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যম ডন।
ইমরান খান তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার জামান পার্কের বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালাতে এলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতাম না। কিন্তু মাত্রই শুনেছি যে, আমার বাসভবনে ৪০ জন সন্ত্রাসী লুকিয়ে আছে। দয়া করে এখানে সভ্যভাবে আসুন এবং আমার বাসভবনে হামলার চেষ্টা করবেন না।’
তিনি বলেন, ‘যদি আমার বাড়িতে ৪০ জন সন্ত্রাসী উপস্থিত থাকে, তাহলে আমার জীবনও তো হুমকির মুখে। আপনারা এখানে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু তার আগে আমাকে সন্ত্রাসীদের নাম বলুন এবং আমরা আপনাদেরকে পুরো বাড়ি দেখাব।
‘তল্লাশি অভিযানের নামে তার বাড়িতে আক্রমণ করবেন না। এই আগুনকে আর বাড়তে দেবেন না।’
পাঞ্জাবের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অভিযোগ করেছে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ৩০ থেকে ৪০ জন সন্ত্রাসী আশ্রয় নিয়েছে। ইমরানের জামান পার্কের বাসভবনে আশ্রয় নেয়া সন্ত্রাসীদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার জন্য ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে পাঞ্জাব সরকার।
বুধবার লাহোরে সংবাদ সম্মেলনে পাঞ্জাবের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর বলেন, ‘পিটিআইয়ের উচিত এই সন্ত্রাসীদের হস্তান্তর করা। নয়তো আইন নিজস্ব গতিতে চলবে। সরকার জামান পার্কে ইমরানের বাসভবনে এই ‘সন্ত্রাসীদের’ উপস্থিতির ব্যাপারে অবগত। আর এ বিষয়ে সরকারের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা প্রতিবেদন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে হাজির হলে সেখান থেকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা। পরে ইমরান খানের এই গ্রেপ্তারকে অবৈধ ঘোষণা করে জামিনের নির্দেশ দেয় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ দেখা দেয়। এই বিক্ষোভে অন্তত আটজনের প্রাণহানি ঘটে।