বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পর্যটন স্বর্গরাজ্য ইউনান

  •    
  • ১০ মে, ২০২৩ ১১:০৩

চারিদিকে চোখ ধাঁধানো প্রকৃতিক সৌন্দর্য, চা বাগানের মুগ্ধতা, বাহারি ফুলের সমাহার কিংবা ওষুধ উৎপাদন- বলা যায় দেশটির অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিও ইউনান। দৃষ্টিসীমা জুড়ে শুধুই নৈসর্গিক সৌন্দর্য। কিছুটা হেঁটে, কিংবা কিছু পথ গাড়িতে খুব কাছ থেকে দেখা মেলে নয়নাভিরাম দৃশ্য।

আকাশপথে মাত্র দুই ঘণ্টার পথ। সেই অর্থে ঢাকা থেকে দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। বলছি চীনের ইউনান প্রদেশের কথা। বাংলাদেশ থেকে এটি দেশটির সব চেয়ে নিকটবর্তী প্রদেশ।

চারিদিকে চোখ ধাঁধানো প্রকৃতিক সৌন্দর্য, চা বাগানের মুগ্ধতা, বাহারি ফুলের সমাহার কিংবা ওষুধ উৎপাদন- বলা যায় দেশটির অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিও ইউনান। দৃষ্টিসীমা জুড়ে শুধুই নৈসর্গিক সৌন্দর্য। কিছুটা হেঁটে, কিংবা কিছু পথ গাড়িতে খুব কাছ থেকে দেখা মেলে নয়নাভিরাম দৃশ্য।

নানা ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ ইউনান। ভূ-প্রকৃতি, পাহাড়, প্রাকৃতিক পরিবেশ, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও খাবার পর্যটকদের সহজেই আকৃষ্ট করে। ইউনানে রয়েছে চিত্তাকর্ষক প্রাকৃতিক দৃশ্য, আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক নিদর্শনাবলি এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার সব উপাদানই এখানে বিদ্যমান। সেই জন্যই চীনের ইউনানকে বলা হয় 'পর্যটন স্বর্গরাজ্য'।

ইউনান প্রদেশের আয়তন ৩ লাখ ৯৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। যা বাংলাদেশের প্রায় তিন গুণ। কিন্তু জনসংখ্যা ৪৭ দশমিক ২ মিলিয়ন, যা বাংলাদেশের তিন ভাগের এক ভাগ। মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে প্রদেশটি সারা বিশ্বের ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

ইউনান সম্পর্কে বলা হয়- এখানে এক পাহাড়েই একসময়ে চার ঋতুর সমাহার ঘটে এবং প্রতি পাঁচ কিলোমিটার পরপর আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যায়। এখানে রয়েছে ২৪০টিরও বেশি প্রাকৃতিক গরম পানির ঝরনা। রয়েছে হিমবাহ, উষ্ণ প্রসবন, সুউচ্চ পর্বতমালা, বরফ ঢাকা পর্বত চূড়া, হ্রদ, অরণ্য আর বিষুবীয় রেইন ফরেস্ট।

চায়ের মাতৃভূমি

ইউনানকে বলা হয় চায়ের মাতৃভূমি। ইউনান প্রদেশের মালিপোতে প্রথমবারের মতো সম্প্রতি হয়ে গেল 'লাওশান ইন্টারন্যাশনাল টি ফেস্টিভ্যাল'। অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের চা শিল্পের বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তা, সামাজিক ব্যক্তিত্ব, এবং গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ফেস্টিভ্যালে তারা চীনা এবং বিদেশী চা সংস্কৃতির উপর মত বিনিময় করেছেন। গ্রামীণ জীবন ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবনে অবদান রাখার জন্য বিশ্বে যৌথভাবে মালিপোর প্রাচীন গাছের চা-এর প্রচার করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এথনেক গ্রুপের পারফরম্যান্স ছিল উপভোগ্য।

দেশি-বিদেশি অতিথিরা হরেকরকম চা পান করেন। চা উৎপাদনে অবদান রাখায় ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একটা স্টলও ছিল।

অনুষ্ঠানে ‘স্প্রিং টি এর সুগন্ধি’ অনলাইন সংক্ষিপ্ত ভিডিও প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয় এবং মালিপো প্রাচীন গাছের একটি আঞ্চলিক ব্র্যান্ড চালু করা হয়।

সমৃদ্ধ ফুল বাজার

ইউনান; যেখানে হাজারের বেশি রয়েছে ফুল উৎপাদন কেন্দ্র। ফুল চাষের মাধ্যমে এখানে গড়ে উঠেছে এশিয়ার বৃহৎ ফুলের বাজার।

নানা ধরনের ফুল চাষ করে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। ভ্রমণপিপাসুরা এখানে এসে ফুলের রাজ্যে হারিয়ে যায়।

কুনমিং ইউনান প্রদেশের সবচেয়ে বড় শহর এবং শহরটি ইউনানের রাজধানী। এছাড়া শহরটি প্রদেশের প্রধানতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র। শহরটি বেশকিছু ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানের জন্যও বিখ্যাত। সুন্দর আবহাওয়ার কারণে শহরটিকে বলা হয় 'বসন্ত নগরী বা চিরবসন্তের দেশ'।

বলা হয়, কুনমিং একটি সমৃদ্ধ শহর। কুনমিং-এ ৫০০ টিরও বেশি প্রজাতির প্রাণী, ১ হাজার ২০০ প্রজাতির বন্য উদ্ভিদ এবং ৪৬০ টিরও বেশি প্রজাতির ফুল রয়েছে। টানা ২০ বছর ধরে এশিয়ার মধ্যে ফুলের বাজারের প্রথম স্থান ধরে রেখেছে চীন। এই কুনমিং থেকে চীনের ব্যাবসায়ীরা ইউরোপসহ অন্তত ১৫টি দেশে ফুল রপ্তানি করে।

ওষুধ উৎপাদন

ইউনান প্রদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত সেউডু-জিনসেং। ওয়েনশান হল সিউডো-জিনসেং-এর উৎপত্তি ও প্রধান উৎপাদনকারী এলাকা। এখানে মূল্যবান ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ উৎপাদন করা হয়।

ওয়েনশান কিহুয়া কোম্পানি ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, যা পূর্বে ওয়েনশান ফার্মাসিউটিক্যাল ফ্যাক্টরি নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালে দুটি পুনর্গঠনের পর ইউনান বাইয়াও গ্রুপের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সাবসিডিয়ারি হয়ে ওঠে। সম্পূর্ণ মানস্পন্ন পরিবেশে এখানে ৭ ধরনের ওষুধ এবং ২৩টি নির্দিষ্ট পণ্য উৎপাদন করা হয়।

এই কোম্পানিটি প্রথম ওয়েনশান প্রিফেকচার গভর্নমেন্ট কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট অ্যাওয়ার্ড জিতেছে। এবং একটি ন্যাশনাল হাই-টেক এন্টারপ্রাইজ এবং ইউনান লিডিং এগ্রিকালচারাল এন্টারপ্রাইজ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।

দর্শনীয় স্থান পুজেহেই

পুজেহেই প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে কুইবেই কাউন্টি হল চীনের একটি দর্শনীয় স্থান। এখান থেকে দর্শনার্থীরা স্বচ্ছ হ্রদ এবং পদ্ম ফুলভরা পুকুর, পান্না পর্বত এবং মনোমুগ্ধকর কার্স্ট ল্যান্ডস্কেপের মনোরম দৃশ্য দেখতে পারেন।

ইয়াও, মিয়াও, হুয়াং সংখ্যালঘুদের উৎসবে আড়ম্বর দেখার জন্যও এই মনোমুগ্ধকর দেশটি একটি আদর্শ জায়গা। জুলাই থেকে আগস্ট হল পুজেহেইয়ের সবচেয়ে সুন্দর সময়। এ সময় পদ্মফুলগুলো পরিপূর্ণ ফুটে থাকে।

এ বিভাগের আরো খবর