ভারতের মণিপুর রাজ্যে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৬০ জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
প্রাণ বাঁচাতে গ্রাম ছেড়েছেন ৩৫ হাজারের বেশি বাসিন্দা। তাদের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চুরাচাঁদপুর, ইমফল উপত্যকা, মোরেহের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘৩ মে শুরু হওয়া সহিংসতায় ৬০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৩১ জন। ১ হাজার ৭০০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গ্রামছাড়া বাসিন্দাদের ক্যাম্পে যাতে কোনো কষ্ট না হয় সেটি নিশ্চিতের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৯৩ শিক্ষার্থীসহ ৩৫ হাজার ৬৫৫ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই।’
তদন্ত চলছে
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায় থেকে ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পেছনে দায়ী প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।’
পরিস্থিতি বর্তমানে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘পুরোপুরি শান্তি ফিরিয়ে আনতে নতুন করে কেউ সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না।’
সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর ইস্যুটি সমাধানের উপায় বের করে রাজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
কারফিউ শিথিল
সোমবার থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। বাসিন্দাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বাজারে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
তবে নতুন করে সহিংসতা ঠেকাতে বিক্ষোভ মিছিলের মতো কর্মসূচির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকার কথা জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।
রাজ্যটিতে বন্ধ রয়েছে ইন্টানেট পরিষেবা।
মেইতে জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত আদালতের এক আদেশের বিরোধিতা করে গত ৩ মে রাজ্যটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। তা শেষ পর্যন্ত সহিংসতায় রূপ নেয়।
মণিপুরে মেইতে জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ, তবে তারা আদিবাসী হিসেবে তালিকাভু্ক্ত নয়। এ কারণে রাজ্যের আইন অনুযায়ী তারা পাহাড়ের স্থায়ী বাসিন্দার সুবিধা ভোগ করতে পারছে না।