ইউক্রেনে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলা শুরুর পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছেন বড়সংখ্যক রুশ।
আল জাজিরার বুধবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুদ্ধে বাধ্যতামূলক যোগদানের ঝুঁকি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে বাঁচতে গত বছর থেকেই থাইল্যান্ডে যাওয়া শুরু করেন রাশিয়ার নাগরিকরা। তাদের কেউ কেউ সেখানে নতুন করে জীবন শুরু করতে চাইছেন।
থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য ফুকেটে রুশরা ৫ লাখ ডলার বা তার বেশি দামে নির্মীয়মাণ বাড়ির অ্যাপার্টমেন্ট কিনছেন। এর মধ্য দিয়ে তারা ওই অঞ্চলে স্থানান্তর কিংবা নিজ দেশে ঝুঁকির মুখে নিরাপদ আশ্রয়ের পথ খুঁজছেন।
ফুকেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের সঙ্গে পুরোদমে যুদ্ধ শুরুর বছর ২০২২ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটিতে যান ২ লাখ ৩৩ হাজার রুশ। এ সংখ্যাটি যেকোনো দেশের পর্যটকের সংখ্যার চেয়ে বেশি।
রাশিয়ায় তীব্র শীত থেকে বাঁচতে দীর্ঘদিন ধরেই রুশদের অন্যতম পছন্দের জায়গা ফুকেট, তবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেনা সমাবেশের ঘোষণার পর থাইল্যান্ডে সম্পত্তি বিক্রি বেড়েছে, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে নিছক অবকাশের বাইরেও দীর্ঘমেয়াদে থাইল্যান্ডে থাকতে চাইছেন অনেকে।
ফুকেটে রিয়েল এস্টেট এজেন্ট হিসেবে কাজ করা রুশ সোফিয়া মালিগায়ভারিয়েল আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমার গ্রাহকদের বেশির ভাগই তরুণ, যাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছর…তারা সম্পদশালী, উচ্চ বাজেটের গ্রাহক।’
সোফিয়া জানান, গত তিন থেকে ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে ফুকেটে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাশিয়ার অনেক নাগরিক।
থাইল্যান্ডের মনোরম দ্বীপগুলোতে বসবাসের জন্য রুশদের দরকার বাড়ি, সন্তানদের জন্য স্কুল, চাকরি ও ভিসা, কিন্তু থাইল্যান্ডে এসব পেতে দেরি হয়। দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদে থাকার অনুমোদন পাওয়া কঠিন।
যুদ্ধের মুখে দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে থাকার বিষয়ে অনড় রাশিয়ার অনেক নাগরিকের কাছে অর্থ কোনো সমস্যা নয়।
থাইল্যান্ডের রুশ অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে সম্পত্তি বেচাকেনায় যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো আলামত না দেখে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছেন অবস্থাসম্পন্ন রুশরা। এতে সম্পত্তির মূল্যবৃদ্ধির রেকর্ড হয়েছে।
বিলাসবহুল যেসব অ্যাপার্টমেন্টের মাসিক ভাড়া কিছুদিন আগেও যেখানে ছিল প্রায় ১ হাজার ডলার, সেটি এখন বেড়ে তিন হাজার ডলার পর্যন্ত ঠেকেছে।