ধ্বংসস্তূপ থেকে একটু পরপরই মরদেহ উদ্ধার হচ্ছে; উদ্ধারকারীরাও ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। তবু মৃতের সংখ্যা যেন গুনে শেষ করতে পারছেন না তারা।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্কে যে লাশের সারি, এতে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে কর্মীদের। কোথাও কোথাও মরদেহের পরিমাণ এতই যে, এগুলো রাখার ব্যাগের সংকট তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাজ্য থেকে মানবিক সহায়তা নিয়ে দেশটির গাজিয়ানটেপ শহরে যাওয়া ইসলামিক রিলিফের কর্মী সালাহ আবুলগাসেম দিয়েছেন এসব তথ্য। বিবিসিকে তিনি বলেন, অনেক যুদ্ধাঞ্চল, অনেক বিপর্যয়ে পড়া অঞ্চল দেখেছি। কিন্তু এটিই আমার দেখা সবচেয়ে বিধ্বংসী এলাকা।
ভয়াবহতার কথা বর্ণনা করে সালাহ বলেন, প্রথম ৭২ ঘন্টা যতটা সম্ভব জীবন বাঁচানোর চেষ্টার ওপর জোর দিয়েছি আমরা। এটি ছিল সময়ের বিরুদ্ধে একটি সত্যিকারের দৌড়।
তিনি বলেন, উদ্ধারকারীরা আরও মরদেহের ব্যাগের অনুরোধ করছেন। ব্যাগ সংকট তৈরি হয়েছে। তারা ধ্বংসস্তূপ থেকে অনেক মরদেহ উদ্ধার করছেন।
সিরিয়ায় সহকর্মীদের কাছ থেকে মৃতদেহের সংখ্যা বেশি হওয়ায় গণকবর খনন করার তথ্য পেয়েছেন বলে জানান এই স্বেচ্ছাসেবী।
স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয় সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে, যার উৎপত্তিস্থল কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক জেলায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) সংস্থার তথ্যমতে, প্রথমে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এরপর অন্তত ১০০ বার কেঁপে ওঠে (আফটার শক) এ দুই দেশ।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল সোমবার দুপুর দেড়াটার দিকে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি। এর উৎপত্তিস্থল ছিল তুর্কির কাহরামানমারাস শহরভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত দু দেশে মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। ধসে পড়েছে হাজারো বাড়ি, হাসপাতাল, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন; গৃহহীন হয়ে পড়েছেন অনেকে।
ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, বাজে আবহাওয়া, প্রয়োজনীয় রসদ ও ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় প্রবেশে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। কিছু কিছু এলাকা জ্বালানি ও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।