তুরস্ক ও সীমান্তবর্তী সিরিয়ায় সোমবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৭৬ জনের প্রাণহানি ও ৪৪০ জন আহত হয়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি অবস্থা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) বলেছে, সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যার উৎপত্তিস্থল কাহরামানমারাস প্রদেশের পাজারসিক জেলায়। উৎপত্তিস্থলে এর গভীরতা ছিল ৭ কিলোমিটার।
পাজারসিকের পর তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় গাজিয়ানটেপ প্রদেশে ৬.৪ ও ৬.৫ মাত্রার দুটি ভূমিকম্প হয়।
ভূমিকম্পে সিরিয়ায় কমপক্ষে ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে। লেবাননে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এর আগে তুর্কি কর্মকর্তা ও সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এতে ৯৫ জনের মৃত্যু হয়। মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির কারণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে দক্ষিণ তুরস্কে অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। কম্পন অনুভূত হয়েছে কাছাকাছি দেশ সাইপ্রাস, লেবানন ও সিরিয়ায়, যাতে অনেক ভবন ধসে পড়েছে।
তুরস্কের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে দ্রুত উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে। কাহরামানমারাস শহরে উড়োজাহাজ পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ঘোষণা করা হয়েছে ‘চতুর্থ পর্যায়ের বিপদ সংকেত’, যার অর্থ হলো আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান।
তুরস্কের কর্মকর্তাদের বিবৃতি অনুযায়ী, দেশটির মালাতিয়া প্রদেশে কমপক্ষে ২৩ জন, সানলিউরফায় ১৭, দিয়ারবাকিরে ৬ এবং ওসমানিয়ে প্রদেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছে তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের বাসিন্দা এরদেম রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি ৪০ বছরে এখানে এমন (ভূমিকম্প) দেখিনি।’
গাজিয়ানটেপ থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে দিয়ারবাকিরের এক প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থাটিকে জানান, প্রায় এক মিনিট ধরে ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যাতে জানালা ভেঙে যায়।
দিয়ারবাকিরের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, ভূমিকম্পে ওই অঞ্চলে কমপক্ষে ১৭ ভবন ধসে পড়ে।