বিজেপির নাম না নিয়েই বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তিনি বলেছেন, ভারতে এখন যে ঘৃণা-বিদ্বেষ ও বিভেদের পরিস্থিতি চলছে, তা বেশিদিন চলবে না।
ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন বলেন, ‘ভারতে কখনও এমন পরিস্থিতি বেশি দিন চলেনি।’
কলকাতার সল্টলেকে রোববার রিসার্চ সেন্টারে প্রতীচী ট্রাস্ট এবং নো ইয়র নেবর-এর আয়োজনে বৈচিত্রের সমন্বয় শীর্ষক আলোচনা সভায় হিন্দু-মুসলিম যুক্ত সাধনার বিষয়ে তাজমহলের নিদর্শন তুলে ধরে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘মতের মিল না হলে মানুষকে মারধর করা হচ্ছে। অন্যের বক্তব্য শুনতে আপত্তি করা হচ্ছে। মানুষকে মর্যাদা দেয়ার ক্ষমতা কমেছে। আর সেটাই আমাদের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ।
‘এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করার প্রবণতা বাড়াতে হবে। পার্থক্য ত্যাগ করতে হবে। দূরত্ব কমাতে হবে।’
ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেন, ‘এরা যেভাবে বিভাজন চায়, সেটাতে আমি আর অবাক হই না।’
অন্যদিকে অমর্ত্য সেনের বিজেপিবিরোধী মন্তব্য নিয়ে উত্তপ্ত্য হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ভারত নিয়ে অমর্ত্য সেনকে ভাবতে হবে না। সারা পৃথিবীতেই ভারত এখন শক্তিশালী। তবে পশ্চিমবঙ্গে বেশিদিন এমন অবস্থা চলবে না। এখানে পরিবর্তন হবেই। সেটা অমর্ত্যবাবু জেনে রাখুন।’
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, দিলীপ ঘোষকে পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, ‘অমর্ত্য সেন শুধু বাংলা বা ভারতের নন। তার কথায় সারা পৃথিবীর জ্ঞান চর্চা সাধন হয়। তাই তার সম্পর্কে বলার আগে, পেটে কালির অক্ষরের চিহ্ন কিছুটা হলেও থাকতে হয়।’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মো. সেলিম অমর্ত্য সেনের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘একজন প্রকৃত চিন্তাবিদ হিসেবেই তিনি তার উপলব্ধি জানিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ থেকে অমর্ত্য সেন, ভারত যে ট্র্যাডিশন বহন করে, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, বহুত্ববাদের কথা বলা হয়। অমর্ত্য সেন সে কথাই ব্যক্ত করেছেন।’
ছবি : বক্তব্য রাখছেন অমর্ত্য সেন