বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান সৌদি সফরে কেন

  •    
  • ৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ১২:২৭

ইসলামাবাদভিত্তিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ ফয়সাল মনে করেন, জেনারেল মুনিরের সফরকে অবশ্যই অর্থনৈতিক দিক থেকে দেখা উচিত। কারণ এ সফর বিশেষভাবে দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে হয়েছে।

সৌদি আরব সফরে গেছেন তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থাকা পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির।

গত নভেম্বরে দায়িত্ব নেয়ার পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর। এক সপ্তাহের এ সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতেও যাবেন মুনির।

এর আগেও দায়িত্ব নেয়ার পরপরই সৌদি সফরে যেতে দেখা যায় পাকিস্তানের সেনাপ্রধানদের।

এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানায়, সেনাপ্রধান উভয় দেশের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পারস্পরিক স্বার্থ, সামরিক সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন। সৌদির বার্তা সংস্থা এসপিএর প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার রিয়াদে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান।

এ নিয়ে টুইটে প্রিন্স খালিদ লেখেন, ‘আমরা দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারত্বের ওপর জোর দিয়েছি, দ্বিপক্ষীয় সামরিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক নিয়ে পর্যালোচনা করেছি। পাশাপাশি আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি।’

পাকিস্তানের তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে সৌদি সফরে রয়েছেন আসিম মুনির।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির বর্তমান রিজার্ভ ৬০০ কোটি ডলারের কম, যা গত আট বছরে সর্বনিম্ন। এ ছাড়া পাকিস্তানে গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পর মূল্যস্ফীতিও ব্যাপক বেড়েছে। বন্যায় দেশটিতে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার সংবাদ সম্মেলনে জানান, অর্থনীতিতে কিছুটা স্বস্তি দিতে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আমানত হিসেবে কিছু অর্থ রাখবে সৌদি আরব।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, দেউলিয়াত্ব ঠেকাতে সৌদির সাহায্য প্রয়োজন পাকিস্তানের। ২০২১ সালের নভেম্বরে ইমরান খানের শাসনামলে ইসলামাবাদকে ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা দেয় রিয়াদ। গত কয়েক মাসে পাকিস্তানকে আরও অর্থ দিয়েছে সৌদি।

গত এপ্রিলে ক্ষমতা নেয়ার পর অর্থনৈতিক সহায়তা ও বিনিয়োগের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সফর করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।

ইসলামাবাদ জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানকে ৯০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে সৌদি। এ ছাড়া দেশটি থেকে ৫০ কোটি ডলারের তেল আমদানি করেছে পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে ৩০০ কোটি ডলার সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কাতারও। ইসলামাবাদভিত্তিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ ফয়সাল মনে করেন, জেনারেল মুনিরের সফরকে অবশ্যই অর্থনৈতিক দিক থেকে দেখা উচিত। কারণ এ সফর বিশেষভাবে দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পাকিস্তানকে গত আগস্টে ১১৭ কোটি ডলারের ঋণ দেয়। সংস্থাটি আরও ১১৮ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা থাকলেও ইসলামাবাদ এটি পেতে এখনও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঋণ দেয়ার জন্য আইএমএফ পাকিস্তানকে জ্বালানির দাম বাড়ানোর শর্ত দেয়। এ শর্তে একমত না হয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে পদত্যাগ করেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছেন, পাকিস্তানও শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়ার দিকে এগোচ্ছে। এটি কেবল অর্থনৈতিক দক্ষতার সঙ্গে প্রতিরোধ করা যেতে পারে।পাকিস্তানভিত্তিক বিশ্লেষক মোহাম্মেদ ফয়সাল মনে করেন, কৌশলগত দিক থেকে পাকিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে সৌদি আরব। সে জন্যই তারা দেশটির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়।

ফয়সাল আল জাজিরাকে বলেন, ‘পাকিস্তান বৃহৎ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। ইসলামের পবিত্র স্থান মক্কা ও মদিনার অভিভাবক হওয়ার সৌদি দাবিকে সমর্থন করে ইসলামাবাদ।’

ক্ষমতা নেয়ার পর শাহবাজ শরিফ ও ইমরান খান উভয়ই সৌদি আরব সফর করেছেন। এ ছাড়া পাকিস্তানের সাবেক দুই সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া, জেনারেল রাহিল শরিফও দায়িত্ব পাওয়ার পর রিয়াদ সফর করেছেন।

রাহিল ২০১৬ সালে দায়িত্ব পাওয়ার আগে সৌদি নেতৃত্বাধীন ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেররিজম কোয়ালিশনের কমান্ডার হন।

সৌদি আরবে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত শহিদ এম আমিন বলেন, ‘এ দুই দেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। পাকিস্তান অর্থনৈতিক সহায়তা পায় এবং নিরাপত্তা সহায়তা দেয়।’

গত পাঁচ দশকে সৌদির উন্নয়নে পাকিস্তানের জনশক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলেও দাবি করেন শহিদ।

এ বিভাগের আরো খবর