অবশেষে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। আগামী মাসের (ফেব্রুয়ারি) যে কোনো সময় হবে ভোট। ২০২২ সালে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও মহামারির কারণে তা হয়নি ।
গত বছর চরম রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখেছে ভারত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্রটি। বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পালিয়ে যাওয়া এবং বিদেশ থেকে তার পদত্যাগ, বৈদেশিক ঋণে দেউলিয়া হওয়া, নিত্যপণের জন্য লঙ্কানবাসীর হাহাকার। সব মিলিয়ে স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।
- আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক মন্দার কারণ
বলা হচ্ছে, নির্বাচনে সব প্রার্থীকেই জনপ্রিয়তার শক্ত পরীক্ষা দিতে হবে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে ভোটে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন। কারণ, সংসদে তিনি তার দলের একমাত্র প্রতিনিধি।
২০২১ সালের শেষের দিকে খাদ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুতের তীব্র ঘাটতি দেখ দিলে রাজাপাকসের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণআন্দোলন দেখা দেয়। পরের বছরের এপ্রিলে ৪৬ বিলিয়ন বৈদেশিক ঋণে খেলাপি হয় দ্বীপরাষ্ট্রটি।
৭৩ বছরের বিক্রমাসিংহে শ্রীলংকার ছয় বারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। রাজাপাকসের এসএলপিপি দলের সমর্থনে প্রেসিডেন্ট পদে স্থলাভিষিক্ত হওয়ায় জন্য সংসদীয় ভোটে জিতেছিলেন তিনি, তবে তার আসলে কোনো ম্যান্ডেট নেই।
বিক্রমাসিংহে তার পূর্বসূরীর আরোপ করা ট্যাক্স কমিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি প্রায় ৭০ শতাংশে ওঠায় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছেন। সরকারবিরোধী বিক্ষোভের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউনেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
২০১৮ সালের শেষ স্থানীয় নির্বাচনে তার ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি ৩৪০ কাউন্সিলের কেবল ৩৪ ভোট পান। আর রাজাপাকসের এসএলপিপি পায় ২৩১ ভোট।
- আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়ার পথে পাকিস্তানও
চলমান অস্থিরতার মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন স্থগিত করার চেষ্টা করেছিলেন বিক্রমাসিংহে। তার ভাষ্য, দেউলিয়া একটি দেশ এই মুহুর্তে নির্বাচনের জন্য ২ কোটি ৭০ লাখ ডলার খরচ করতে পারবে না। তারপরও স্বাধীন নির্বাচন কমিশন বুধবার নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে।
একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশন জানায়, ১৮ থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি কাউন্সিলর পদের জন্য মনোনয়নপত্র কেনা যাবে। পরের ২৮ দিনের মধ্যে হবে ভোট।
বহাল থাকবে বর্তমান জাতীয় প্রশাসন
বিক্রমাসিংহে ২০ ফেব্রুয়ারি তার পাঁচ বছরের মেয়াদের অর্ধেক পূর্ণ করবেন। এরপর থেকে তিনি বর্তমান সংসদ ভেঙে দিতে পারবেন, তবে ‘স্ন্যাপ পার্লামেন্টারি ভোটে’ যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেননি প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে।
শ্রীলংকার সাংবিধান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকের আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে পারবে না।