বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আল-আকসায় ইসরায়েলি মন্ত্রী, ফুঁসে উঠল আরব বিশ্ব   

  •    
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ২০:০২

ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়া মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আরব রাষ্ট্রগুলোও নিন্দা জানিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, যে সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েল শান্তি চুক্তি করতে মুখিয়ে, তারাও এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। ইসরায়েলি মন্ত্রীর এই সফরটি ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভকে আরও তীব্র করেছে।

ইসরায়েলি মন্ত্রীর আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢোকার ঘটনায় প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে আরব বিশ্ব। আল-আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক দেশ জর্ডান এই সফরকে আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন জানিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে

ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়া মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আরব রাষ্ট্রগুলোও নিন্দা জানিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, যে সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েল শান্তি চুক্তি করতে মুখিয়ে, তারাও এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। ইসরায়েলি মন্ত্রীর এই সফরটি ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভকে আরও তীব্র করেছে।

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ মুসলিমদের কাছে ‘নোবেল স্যাঙ্কচুয়ারি’ হিসেবে পরিচিত। এটি ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান। পাশাপাশি এটি ইহুদি ধর্মেরও সবচেয়ে পবিত্র স্থান। এখানে তাদের দুটি প্রাচীন মন্দিরের অবশেষ রয়েছে।

ধর্মপ্রাণ ইহুদিরা মঙ্গলবার খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর সেই মন্দির দুটির প্রথমটিতে ব্যাবিলনীয় অবরোধের স্মরণে উপবাস করেছিলেন। এ সময় আকস্মিকভাবে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ পরিদর্শনে আসেন ইসরায়েলের নতুন উগ্র ডানপন্থি সরকারের নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির।

আল আকসা মজজিদ প্রাঙ্গণ

এই সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে পাশের বেথলেহেমে এক ফিলিস্তিনি কিশোরকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, নিরাপত্তার স্বার্থে গুলি করা হয়েছে ওই কিশোরকে।

পরিদর্শন শেষে প্রথম টুইটে ইসরায়েলি মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির লেখেন, ‘টেম্পল মাউন্ট সবার জন্য উন্মুক্ত।’

আল আকসা সাইটের ইহুদি নাম টেম্পল মাউন্ট।

টুইটারে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কম্পাউন্ডের সীমানায় ঘোরাফেরা করছেন বেন-গভির। তার পাশে একজন অর্থোডক্স ইহুদি। তাদের ঘিরে আছে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত একদল নিরাপত্তা বাহিনী।

The #Israeli far right wing minster Ben Gvir visited in Al-Aqsa compound for 13 minutes for the first time since election, pic.twitter.com/IP2xk4bsTJ

— Rushdi Abualouf (@Rushdibbc) January 3, 2023

এ সফরের পক্ষে সাফাই বক্তব্য দিয়েছে ইসরায়েল সরকার। তেল আবিবের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জাতীয়তাবাদী-ধর্মীয় মন্ত্রিসভার শীর্ষ সদস্য বেন-গভিরের ১৫ মিনিটের সফরটি নিয়ম মেনেই হয়েছে। কারণ, কয়েক দশক আগের একটি ‘তথাকথিত স্থিতাবস্থা’ অমুসলিমদের শর্তের বিনিময়ে স্থানটি ভ্রমণের অনুমতি দেয়। শর্ত অনুযায়ী, অমুসলিমরা সেখানে প্রার্থনা করতে পারবেন না। আমাদের মন্ত্রী মসজিদের কাছেই যাননি।

সফরটি কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই শেষ হলেও, এটি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টির ঝুঁকি তৈরি করেছে।

ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ ফিলিস্তিনিদের ‘আল-আকসা মসজিদে হামলা মোকাবিলা করার’ আহ্বান জানিয়েছেন। বেন-গভিরকে স্থানটিকে ‘ইহুদি মন্দিরে পরিণত করার’ ষড়যন্ত্র করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী।

ইসরায়েল অবশ্য এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আল-আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদি প্রার্থনার ওপর নিষেধাজ্ঞার অবসানের পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বেন-গভির। ইসরায়েলের নতুন মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ সদস্য এখন এটাই চাইছে।

বেন-গভির ইসরায়েলি পুলিশ বাহিনীর তত্ত্বাবধায়ক। এই পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে আল-আকসা প্রাঙ্গণে ইহুদি প্রার্থনার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার দায়িত্বপ্রাপ্ত।

ইসরায়েলের সঙ্গে সহাবস্থান প্রত্যাখ্যানকারী এবং গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি ইসলামি গোষ্ঠী হামাসের এক মুখপাত্র বেন-গভিরের সফর নিয়ে বলেন, ‘এই আচরণের ধারাবাহিকতা সব পক্ষকে একটি বড় সংঘর্ষের কাছাকাছি নিয়ে যাবে।’

অর্থোডক্স ইহুদিকে নিয়ে আল আকসা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন বেন-গভির (বাঁয়ে)

টুইটে হামাসের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করেননি ইসরায়েলের নিরাপত্তামন্ত্রী বেন-গভির।

তিনি লেখেন, ‘হামাস যদি মনে করে যে তারা আমাকে হুমকি দিয়ে আটকাতে পারবে, তবে তাদের বোঝা উচিত যে সময় বদলে গেছে। জেরুজালেমে একটি সরকার আছে!’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তার ষষ্ঠ মেয়াদে পবিত্র স্থানগুলোর চারপাশে ‘স্থিতিশীলতা’ রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বেন-গভির মঙ্গলবার বলেন, ‘জেরুজালেম প্রাঙ্গণে আন্দোলনের স্বাধীনতা বহাল থাকবে।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু

এ সময় তিনি উপাসনার স্বাধীনতার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।

ইসরায়েল গোটা জেরুজালেমকে তার ‘অবিচ্ছিন্ন’ রাজধানী মনে করে। তবে এই মর্যাদা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়। অন্যদিকে পূর্ব জেরুজালেমকে (যেখানে কম্পাউন্ডটি অবস্থিত) ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী বিবেচনা করে পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখেন ফিলিস্তিনিরা।

এ বিভাগের আরো খবর