২৪ ঘণ্টার কম সময়ে একই এলাকায় আলাদা দুটি হামলায় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর। রাজৌরি জেলায় রোববার সন্ধ্যায় তিনটি বাড়িতে ‘জঙ্গিদের’ গুলিতে চারজন নিহত ও নয়জন আহত হয়েছেন। পরদিন সোমবার একই বাড়ির কাছে বিস্ফোরণে এক শিশু নিহত হয়, আহত হন চারজন।
বিস্ফোরণের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি। পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন।
রোববারের হামলা পর রাজৌরিতে বিক্ষোভ ও ধর্মঘট শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে এসব হামলা হয়েছে।
অঞ্চলের প্রশাসনিক প্রধান মনোজ সিনহা ‘রাজৌরিতে কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলার’ নিন্দা জানিয়ে নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন।
টুইটে সোমবার তিনি লেখেন, ‘আমি জনগণকে আশ্বস্ত করছি যে এই ঘৃণ্য হামলার পেছনে যারা শাস্তি থেকে তাদের কেউ বাঁচাতে পারবে না।’
কাশ্মীরের হিমালয় অঞ্চলটি নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তান বিরোধ দীর্ঘদিনের। দুই দেশই অঞ্চলটিকে নিজেদের বলে দাবি করে। পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশীরা ১৯৪৭ সাল থেকে কাশ্মীর নিয়ে দুটি যুদ্ধ এবং একটি ছোট সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে। এরপর থেকে আদাজ কাশ্মীর নামে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নেয় পাকিস্তান। আর জম্মু ও কাশ্মীর নামে অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয় ভারত।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে জম্মু কাশ্মীরে ভারতের শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ দেখা গেছে। এতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
জম্মু ও কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের মদত দিয়ে অশান্তি ছড়ানোর জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করে দিল্লি। তবে অভিযোগ সবসময় অস্বীকার করে আসছে ইসলামাবাদ।
জম্মু ও কাশ্মীর ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য ছিল। সেবছরের আগস্টে কেন্দ্রীয় সরকার অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করে দুটি আলাদা অঞ্চলে বিভক্ত করে।
রোববার যে চারজনকে হত্যা করা হয়েছে তারা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের। গত এক বছরে কাশ্মীরে বেশ কয়েকজন হিন্দু ‘জঙ্গিদের’ লক্ষ্যবস্তু হামলায় নিহত হয়েছে, যা সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।