বিশ্ব রাজনীতিতে ২০২২ সালে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানে এখন পর্যন্ত তেমন সাফল্য না এলেও, যুদ্ধের প্রভাবে থমকে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি।
পুতিন চেয়েছিলেন, ইউক্রেনকে দ্রুত পরাস্ত করে বিশাল রাশিয়ান সাম্রাজ্যে তিনি রাজত্ব করবেন। তবে পুতিনের আশা পূরণ হয়নি বিদায়ী বছরে। সব মিলিয়ে খুব একটা ভালো বছর কাটাননি লৌহমানবখ্যাত ভ্লাদিমির পুতিন।
ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর, ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠরা ভেবেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে ইউক্রেন। তবে ইউক্রেনীয়দের শক্ত প্রতিরোধ এবং বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞার কারণে নিজেকে বছর শেষে শুরুর চেয়ে দুর্বল অবস্থানে খুঁজে পেয়েছেন পুতিন।
২০ ডিসেম্বর পুতিন স্বীকার করেন, অভিযানটি ‘অত্যন্ত জটিল’। এর কিছুদিন আগে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছে।
ইউক্রেনে দখল করা একের পর এক অঞ্চল যখন রুশ সেনাদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, তখন ক্রেমলিন জানায়, এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বছর শেষের নিয়মিত প্রেস কনফারেন্স করবেন না প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এখানেই শেষ নয়। ২০২২ সালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পুতিনকে বহিষ্কার করেছে। যার প্রভাবে রাশিয়াকে ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি মুখে পড়তে হয়েছে। বুখার মতো শহরে বেসামরিক নাগরিকদের নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার জন্য তাকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগেরও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া মস্কভা জাহাজের ডুবে যাওয়া এবং কের্চ ব্রিজে বোমা হামলাসহ বেশ কয়েকটি ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে পুতিনকে।
শুধু তাই নয়, রুশ তরুণদের ‘জোর করে’ যুদ্ধের ময়দানে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে পুতিনের বিরুদ্ধে। এসব সেনাদের পরিবার রাশিয়ারজুড়ে পুতিনবিরোধী বিক্ষোভও করেছে।
পুতিনের ব্যক্তিগত জীবনও চলতি বছর সবার নজরে ছিল। তার কথিত বান্ধবী আলিনা কাবেভা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন। পুতিনের স্বাস্থ্য নিয়েও জোর জল্পনা চলছে। যদিও রাশিয়ার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এখনও পুতিনের পক্ষে আছে।
পুতিনের ‘নৃশংস’ যুদ্ধের ফলে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ান বোমার আঘাতে দেশটির বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায়, তীব্র ঠাণ্ডায় ভয়ংকর এক মৌসুম পার করছেন ইউক্রেনীয়রা।