বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বড়দিনে ইউক্রেনে অন্ধকার নামাচ্ছেন পুতিন

  •    
  • ১৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৭:৫৯

শুক্রবার সকালে ইউক্রেনবাসীর ঘুম ভাঙে সাইরেনের শব্দে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইগনাট বলেন, ‘মোট ৬০টি মিসাইল আঘাত হেনেছে। মিসাইল হামলার আগে ড্রোন হামলাও চালিয়েছে রুশ বাহিনী।’

ইউক্রেনের আশঙ্কাই সত্যি হলো। নতুন বছর ঘিরে কিয়েভে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে বিদ্যুৎ সংকটে থাকা ইউক্রেন পড়েছে আরও বিপদে। বড়দিন এখন একপ্রকার অন্ধকারেই কাটাবে হবে ইউক্রেনবাসীকে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইউক্রেনজুড়ে শুক্রবার ৬০টি মিসাইল ছুড়েছে রুশ বাহিনী। চলেছে ড্রোন হামলাও। কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানী কিয়েভের চারপাশের শহরগুলো নতুন হামলার শিকার হয়েছে।

একদিন আগে ইউক্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় যুদ্ধক্ষেত্রে একের পর বিপর্যয় সত্ত্বেও নতুন বছর ঘিরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

শুক্রবার ক্রিভিহ রিহর একটি আবাসিক ভবনে মিসাইল আঘাত হানলে দুইজন নিহত হন। খেরসনে নিহত হয়েছে একজন।

ইউক্রেন কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়া এখন বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। হামলায় উত্তর খারকিভসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

শুক্রবার সকালে ইউক্রেনবাসীর ঘুম ভাঙে সাইরেনের শব্দে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইগনাট বলেন, ‘মোট ৬০টি মিসাইল আঘাত হেনেছে। মিসাইল হামলার আগে ড্রোন হামলাও চালিয়েছে রুশ বাহিনী।’

কর্তৃপক্ষ জানায়, একটি মিসাইল কেন্দ্রীয় শহর ক্রাইভিহ রিহের একটি আবাসিক ভবনে আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে দুইজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনে শুক্রবার ভোরের আলো ফোটার আগে আবাসিক ভবনে হামলায় একজন নিহত হন। খেরসনের কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার গোলার আঘাতে দুইজন নিহত হন।

হামলার কারণে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর সীমান্তের কাছাকাছি সুমি অঞ্চল, পোলতাভা এবং ক্রেমেনচুকের কেন্দ্রীয় শহরগুলো বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট অফিসের ডেপুটি হেড কিরিলো টিমোশেঙ্কো বলেন, ‘সারা দেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে।’

ইউক্রেনে তীব্র শীত চলছে। আবহাওয়াকে কাজে লাগাতে ইউক্রেনের ‘প্রয়োজনীয় সুবিধাগুলোকে’ পুতিন টার্গেট করেছে বলে অভিযোগ আছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ইউরি সাক বলেন, ‘জরুরি পরিষেবাগুলোতে মেরামতের কাজ চলছে, তবে পরিস্থিতি এখনও খারাপ।’

মধ্য অক্টোবরের পর থেকে ইউক্রেনে ১ হাজারের বেশি মিসাইল এবং ইরানের তৈরি ড্রোন ব্যবহার করছে রাশিয়া।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘বিদ্যুৎ সুবিধাগুলোতে আরও হামলা মানবিক পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর অবনতির দিকে ঠেলে দেবে। এতে আরও বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটবে।’

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, ‘রাশিয়ান হামলা তাপ এবং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এতে ব্যাপক ব্ল্যাকআউট হচ্ছে। উষ্ণ পানি সরবরাহে সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। কিছু এলাকায় দিনে কেবল কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।’

দক্ষিণে জাপোরিঝিয়াতে ১৫টি মিসাইল ছোড়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, ‘শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় মিসাইল আঘাত হেনেছে। জ্বালানি অবকাঠামোতে ক্ষতির কারণে রাজধানীর পানি সরবরাহে প্রভাব পড়েছে। শহরের মেট্রো লাইন এখনও চালু হয়নি।’

আঞ্চলিক প্রশাসনের প্রধান ওলেক্সি কুলেবা জানান, ইউক্রেনে ব্যাপক তাণ্ডব চালাচ্ছে রাশিয়া।

ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ বলছে, এক মাস আগে খেরসনসহ অধিকৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধারে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক সাফল্যের পর রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে সামরিক ধাক্কার জবাব দিচ্ছে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইউরি সাক বলেন, ‘এর জন্য রাশিয়াকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তারা ইউক্রেনকে আলোচনায় বসার জন্য বাধ্য করতে একটা পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে। এটা হবে না। পুতিনের পরিকল্পনা কাজে আসবে না।

‘রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন এখনও পুরো ইউক্রেনকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান। যুদ্ধ যে শেষ হয়নি, সে বার্তাই দিতে চাচ্ছেন পুতিন।’

কেন রাশিয়া হামলা জোরদার করেছে তা স্পষ্ট নয়। কিয়েভের অনুরোধে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল পাঠানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছেন বলে জানা গেছে।

রুশ হামলা ঠেকাতে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী যথেষ্ট কার্যকর বলে দাবি করছে দেশটির সরকার। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিয়েভে বুধবার রাশিয়ার ১৩টি ড্রোন তারা ভূপাতিত করেছে।

এ বিভাগের আরো খবর