সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যাকাণ্ডে সৌদি আরবের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে করা একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ওয়াশিংটনের একটি আদালত মঙ্গলবার এই মামলা খারিজ করে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাংবাদিক খাশোগজিকে হত্যায় বিন সালমানের ভূমিকা নিয়ে মামলাটি করেছিলেন খাশোগজির বাগদত্তা হাতিশ চেঙ্গিস এবং তার অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ ডন। ওয়াশিংটনের ফেডারেল বিচারক জন বেটস জানান, একটি বিদেশি সরকারের বর্তমান প্রধান হিসেবে সৌদি যুবরাজ যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের বিচারের আওতা থেকে রেহাই পাবেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের অবস্থান এটি।
এর আগে গত ১৭ নভেম্বর একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিচারক জন বেটস জানান, সরকারের অবস্থানের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই। সালমান বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়মুক্তি পেতে পারেন।
যদিও কয়েক সপ্তাহ আগেই যুবরাজকে প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করা হয়েছে, তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্বাহী শাখা সৌদি আরবসহ বৈদেশিক বিষয়গুলো দেখভাল করে। বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ থাকার পরেও বিন সালমানের বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হলে এটি সরকারের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হবে।
২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের কনস্যুলেটে খুন হন দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট ও সৌদি রাজতন্ত্রের নীতির কট্টর সমালোচক খাশোগজি। বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি নিতে সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন তিনি। পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের তদন্তে উঠে আসে, এ হত্যাকাণ্ডে মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশ ছিল।
খাশোগজি হত্যা নিয়ে ২০২১ সালে ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে সৌদি আরবের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ যুবরাজের। ফলে যুবরাজের অনুমোদন ছাড়া খাশোগজি হত্যার মতো একটি অভিযান পরিচালনার সম্ভাবনা খুবই কম।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে সেসময় বলা হয়, যুবরাজ খাশোগজিকে হুমকি মনে করতেন এবং দরকার হলে সহিংস কায়দায় তাকে দমিয়ে রাখার পদক্ষেপে যুবরাজের জোর সমর্থন ছিল।