শীত শুরু হয়ে গেছে যুদ্ধে বিপর্যস্ত ইউক্রেনে। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক দিন ধরে চলছে তুষারপাত। রাজধানী কিয়েভে তাপমাত্রা রোববার শূন্যের কাছাকাছি রেকর্ড হয়েছে। রাশিয়ার তীব্র বিমান হামলায় দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র এবং কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভয়াবহ এক মৌসুমের মুখে পড়েছে ইউক্রেনবাসী।
গ্রিড অপারেটর ইউক্রেনারগো বলেন, ‘ঠান্ডা আবহাওয়ায় ধীরে ধীরে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। মেরামতকর্মীরা ধ্বংসপ্রাপ্ত বিদ্যুৎ অবকাঠামোগুলো ঠিক করতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।’
বুধবার রাশিয়ার মিসাইল হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো এখনও চালু করতে পারেনি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা। ফলে সরবরাহে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও প্রকট হয়ে ওঠার আশঙ্কায় আছেন কিয়েভ শাসকরা। এই অবস্থায় ব্ল্যাকআউট দিয়ে বিদ্যুৎ সংরক্ষণ ছাড়া উপায় দেখছে না কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনারগো বলেন, ‘ঘাটতির কারণে ব্যবহারে বিধিনিষেধ এখনও বহাল রয়েছে। এটা বর্তমানে প্রায় ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।’
মস্কো সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিমান হামলার মাধ্যমে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে; যা ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট সৃষ্টি করেছে। এসব হামলায় প্রাণ ঝরছে বেসামরিক নাগরিকদেরও।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। সে থেকে নানা কৌশলে কিয়েভ শাসকদের কোণঠাসা করার চেষ্টায় আছে পুতিন বাহিনী। ৯ মাসের মধ্যে গত বুধবারের হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ইউক্রেনের।
হামলার প্রভাবে দেশটির তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেছে; লক্ষাধিক মানুষ আলো, পানি ও উষ্ণতার সংকটে ভুগছে।
রাশিয়ার বিমান হামলায় কিয়েভের অনেক অংশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরপরই রাস্তায় এক দম্পতি চুমু খাচ্ছেন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির রাজনৈতিক দলের প্রধান ডেভিড আরাখামিয়া শঙ্কা প্রকাশ করছেন, রাশিয়া আগামী সপ্তাহে নতুন অবকাঠামোতে হামলা চালাবে। এতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেনের ১৭ অঞ্চলের মধ্যে ১৪টিতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ রয়েছে। এতে প্রতিটি অঞ্চলে এক লাখের বেশি গ্রাহক বিপদে আছেন। কিয়েভ এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা তারা।
নাগরিকদের বিদ্যুৎ সংরক্ষণের আবেদন পুনর্ব্যক্ত করে শনিবার প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘সন্ধ্যায় যদি বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে তবে তখন বিভ্রাটও বাড়তে পারে। শক্তি সঞ্চয় করা এবং যুক্তিসংগতভাবে ব্যবহার করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ... এই পরিস্থিতিতে সেই শিক্ষা আমরা পাচ্ছি।’