ভারতের স্থানীয় ভাষার পরিবর্তে হিন্দি চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তামিলনাড়ু রাজ্যের এক কৃষক। স্থানীয় পুলিশের বরাতে রোববার এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা এএফপি।
বৃদ্ধের নাম এম ভি থাংগাভেল। তার বয়স ৮৫ বছর।
আত্মহত্যার আগে কৃষক থাংগাভেলের হাতে একটি প্ল্যাকার্ড ছিল। সেখানে তামিল ভাষায় লেখা, ‘মোদি সরকার হিন্দি চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা বন্ধ করো। কেন আমরা আমাদের সমৃদ্ধ তামিল ভাষার পরিবর্তে হিন্দি ভাষা ব্যবহার করব? এতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
সেনথিল নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘কৃষক থাংগাভেল আত্মহত্যা করেছেন।’
ভারতে মাতৃভাষা খুব সংবেদনশীল বিষয়। প্রায় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে রয়েছে শত শত ভাষা-উপভাষা। এ কারণে ভারতের সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যদিও আঞ্চলিক সরকারগুলো তাদের নিজেদের ভাষাই ব্যবহার করে। ২০১১ সালের এক আদমশুমারি অনুযায়ী, ভারতের ৪৪ শতাংশ মানুষ হিন্দিতে কথা বলে। গত মাসে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নেতৃত্বে একদল আইনপ্রণেতা হিন্দিকে জাতীয় ভাষা করার সুপারিশ করেন। এমনকি মেডিসিন ও প্রকৌশলের মতো কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমও হিন্দিতে করার আহ্বান জানান তারা।
সরকারি ভাষা হিসেবে ইংরেজির ব্যবহারকে ‘দাসত্বের মানসিকতা’ বলে সমালোচনা করে থাকেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর বদলে ভারতীয় ভাষার ব্যবহারে জোর দিয়ে থাকেন তিনি।
তবে বিরোধীদের অভিযোগ, মোদির সরকার হিন্দি চাপিয়ে দিয়ে ভারতকে বিশেষত দক্ষিণাঞ্চলকে খেপিয়ে তুলছে। দক্ষিণের মানুষ প্রধানত দ্রাবিড় জাতিগোষ্ঠীর ভাষায় কথা বলে। ইন্দো-ইউরোপীয় জাতিগোষ্ঠীর ভাষাগুলোর চেয়ে সে ভাষা একেবারে আলাদা।