বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শ্রদ্ধার দেহাংশের সন্ধান দিয়েছি, আদালতে আফতাব

  •    
  • ২২ নভেম্বর, ২০২২ ২১:০৩

২৮ বছর বয়সী আফতাব বলেছেন, তিনি পুলিশকে সহযোগিতা করছেন। যেখানে মরদেহের টুকরোগুলো ফেলেছিলেন তার সন্ধানও দিয়েছেন।

ভারতের দিল্লিতে লিভ ইন পার্টনারকে হত্যা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন একমাত্র অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালা। জানিয়েছেন, রাগের মাথায় আকস্মিক এই খুন করে ফেলছেন তিনি। দাবি করেছেন, ঘটনাটি নিয়ে যা প্রচার হচ্ছে তা পুরোপুরি সত্য না।

মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ২৮ বছরের যুবক আফতাব পুনাওয়ালা তার লিভ ইন পার্টনার ২৬ বছরের শ্রদ্ধা ওয়াকারের সঙ্গে দিল্লির ছাতারপুর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। চলতি বছরের ১৮ মে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সেদিন শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন আফতাব। তারপর মরদেহ ৩৫ টুকরো করে সেগুলোকে রাখার জন্য ৩০০ লিটারের একটি ফ্রিজ কেনেন তিনি। পরের ১৮ দিনে মেহরাউলি জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় টুকরোগুলো ফেলে আসেন আফতাব।

৮ নভেম্বর শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদন ওয়াকার মেয়ের খোঁজে মেহরাউলি পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে ১২ নভেম্বর আফতাবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জেরার মুখে তিনি হত্যার করা স্বীকার করেন। জানান, শ্রদ্ধা তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এ নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে শ্রদ্ধাকে তিনি খুন করেন।

পাঁচ দিন পুলিশের হেফাজতে থাকার পর মঙ্গলবার আফতাবকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দিল্লির সাকেত আদালতে তোলা হয়। শুনানিতে আফতাব আদালতকে জানান, পুলিশকে তিনি সহযোগিতা করছেন। মরদেহের টুকরোগুলো যেখানে ফেলেছেন, সে স্থানের খবর তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। হত্যার পুরো বর্ণনা আদালতকে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়ে আফতাব জানান, অনেকদিন হয়ে যাওয়ায় সবকিছু স্পষ্ট মনে পড়ছে না তার।

আদালত থেকে আফতাবকে ফের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হচ্ছে

শুনানি শেষে আফতাবকে আরও চারদিন জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয় আদালত।

আফতাবের আইনজীবী অবিনাশ বলেন, শুনানিতে আরও তদন্তের খাতিরে হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করে পুলিশ।

‘আফতাব আদালতকে বলেছে সে পুলিশকে সহযোগিতা করছে। পুলিশও তার সঙ্গে ভাল আচরণ করছে। পুলিশও আদালতে তার দাবির বিরোধীরতা করেনি। মরদেহের টুকরো উদ্ধারে দিল্লির মেহরাউলি জঙ্গল এবং ময়দানগড়ি এলাকায় আফতাবকে নিয়ে যাবে পুলিশ। সেখানের দুটি পুকুরে টুকরোগুলো ফেলেছেন আফতাব।’

দিল্লি পুলিশ বলছে, মরদেহ টুকরো করতে ব্যবহৃত করাত এবং ব্লেডটি গুরুগ্রামের ডিএলএফ ফেজ এলাকার একটি ঝোঁপে ফেলেছেন আফতাব। পুলিশ দুই দফায় ওই ঝোঁপে অনুসন্ধান চালিয়েছে।

তবে কিছু সূত্র বলছে, মাংস কাটার ছুরিটি দক্ষিণ দিল্লির মেহরাউলি ১০০ ফুট রাস্তার পাশে একটি ডাস্টবিনে ফেলেছেন আফতাব।

ফরেনসিক দল মঙ্গলবার আফতাবের ছাতারপুরের ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। এই ফ্ল্যাটে শ্রদ্ধাকে খুন করা হয়। বাথরুমের টাইলস ভেঙে রক্তের দাগ খুঁজে পেয়েছে ফরেনসিক দল। টাইলসগুলো ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

দিল্লি পুলিশ গত শুক্রবার গুরুগ্রামের ঝোপ থেকে কিছু প্রমাণ সংগ্রহ করে। এগুলো সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছে তারা।

পরদিন শনিবার মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে গুরুগ্রামে অনুসন্ধান চালালেও, কিছুই পায়নি দিল্লি পুলিশ। যে দোকান থেকে করাতটি কিনেছিলেন, সেই দোকানেও আফতাবকে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। এটি আফতাবের ফ্ল্যাট থেকে মাত্র ২৫০ মিটার দূরে অবস্থিত।

শ্রদ্ধাকে হত্যার পর দেহ ৩৫ টুকরো করে এই ফিজে রাখেন আফতাব

পুলিশ রোববার মেহরাউলি জঙ্গল থেকে আরও দেহাবশেষ উদ্ধার করে। তারা এ পর্যন্ত একটি মাথার খুলির গোড়া, চোয়ালসহ ১৮টি হাড় উদ্ধার করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাব জানায়, এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

আফতাবের ফ্ল্যাট থেকে ভারী এবং ধারালো সরঞ্জামও জব্দ করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো দিয়েই শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করেছেন আফতাব। তার গুরুগ্রাম কর্মস্থল থেকে একটি মোটা কালো পলিথিন ব্যাগও জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশের কয়েকটি সূত্র বলছে, কোনো সাক্ষী না থাকায় হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নির্ভর করছে ফরেনসিক রিপোর্ট, কল ডাটা এবং পরিস্থিতিগত প্রমাণের ওপর।

দিল্লি পুলিশ মঙ্গলবার আদালতকে জানায়, তদন্তের ৮০ ভাগ শেষ। আগামী কয়েকদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; কারণ মামলার মূল প্রমাণ এখনও অনুপস্থিত।

এ বিভাগের আরো খবর