লটারি জয়ের কয়েক কোটি টাকা ঢুকেছে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল কেষ্ট ও তার মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে অন্তত ৫ বার তারা লটারি জিতেছেন বলে তথ্য পেয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (ইডি)। তা নিয়ে চলছে জোর তদন্ত।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গরু পাচার মামলায় গ্রেপ্তার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা অনুব্রত মণ্ডল কেষ্ট বর্তমানে কারাগারে। আর তিহার জেলে বন্দি আছেন তার দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। অর্থ লেনদেন নিয়ে লাগাতার জেরার মুখে পড়েছেন কেষ্টকন্যা সুকন্যা মণ্ডল। তাদের লটারি জয়ের টাকা এখন নতুন করে হাওয়া দিচ্ছে তদন্তের পালে।
গোয়েন্দাদের দাবি, দেহরক্ষী সায়গল হোসেন মূলত পুরষ্কার পাওয়া লটারির টিকিট সংগ্রহ করতেন। এরপর টিকিটের নম্বর পাঠিয়ে দেয়া হতো লটারি সংস্থার কর্তার কাছে। প্রাইজমানি আগে থেকে ঠিক করা থাকতো, সেই মতো নগদ টাকা পৌঁছে যেত টিকিটের আসল মালিকের কাছে। অন্যদিকে লটারির টাকা কাগজে-কলমে ঢুকতো কেষ্ট ও তার কন্যার হিসেবে। এভাবে কালো টাকা সাদা করা হতো।
কেষ্ট পরিবারের লাগাতার এ লটারি জেতার রহস্য উন্মোচনে ইডি জোর তদন্ত শুরু করেছে। সায়গলের দেয়া তথ্য ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যাচাই করে সংশ্লিষ্ট লটারি সংস্থার দুই কর্ণধারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে ইডির সদর দপ্তরে হাজিরা দেয়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, গরু পাচারের কালো টাকা লটারির আড়ালে ঢুকেছে অনুব্রত ও তার কন্যার অ্যাকাউন্টে। গত তিন বছরে অন্তত ২ কোটি ১১ লাখ টাকার এমন রহস্যজনক লেনদেন দেখা গেছে।
কেষ্টকন্যা সুকন্যার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে লটারি বিজেতা হিসেবে ঢুকেছে ৫০ লাখ টাকা। এর আগে দুবার লটারি জেতার টাকা ঢুকেছে ২৫ লাখ ও ২৬ লাখ টাকা করে।
২০১৯ সালে কেষ্টের নিজ অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে লটারি বিজেতার ১০ লাখ টাকা। চলতি বছরে ডিয়ার লটারির ১ কোটি টাকা পেয়েছেন কেষ্ট।
তদন্তকারীদের দাবি, গরু পাচার কাণ্ডের কালো টাকা লটারির মাধ্যমে এভাবে সাদা করা হয়েছে। বীরভূম জেলার ডাকসাইটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট ও তার পরিবার সদস্যদের অ্যাকাউন্টে গত তিন বছরে ২ কোটি ১১ লাখ টাকা ঢুকেছে শুধু লটারি জয়ের অজুহাতে।
গরু পাচার মামলায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট মণ্ডলকে গত ১০ আগস্ট গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে তাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সিবিআই এবং ইডির গোয়েন্দারা।