গোটা বিশ্বকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক নানা চাপেও টলানো যাচ্ছে না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। বিশ্ব থেকে অনেকটা একঘরে হয়ে পড়া রাশিয়ার পুরোনো মিত্র চীনকে অবশ্য ইউক্রেন ইস্যুতে খুব একটা কথা বলতে দেখা যায়নি। যদিও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তোলা প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে বন্ধুত্বের প্রমাণ রাখছে বেইজিং।
অন্যতম পরাশক্তি চীনের এমন নিরবতার পেছনে বেইজিং-মস্কোর মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্বকে দায়ী করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘দুটি পরাশক্তি দেশ আলাদা হয়ে যাচ্ছে। চীন নিজেকে রাশিয়া থেকে দূরে রাখার চেষ্টায় আছে।’
বাইডেনের কথায় তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য মস্কো না করলেও, জবাব দিতে দেরি করেনি বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান শুক্রবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মস্কোর সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক ‘অত্যন্ত মজবুত’ এবং আগের মতোই চমৎকার।
‘চীন এবং রাশিয়া নতুন যুগের কৌশলগত সহযোগিতার অংশীদার; যারা কখনোই তৃতীয় পক্ষের মোকাবিলা বা লক্ষ্যবস্তু করার চেষ্টা করেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘মস্কো এবং বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতা ও স্থিতিশীল উন্নয়ন উচ্চ মাত্রার পারস্পরিক বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে।’
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার দাবি করেন, রাশিয়া এবং তার প্রেসডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি চীনের ‘অনেক শ্রদ্ধা’ থাকলেও, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে জোট হিসেবে দেখাতে চায় না বেইজিং। আর এ কারণেই মস্কো থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে বেইজিং।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। পূর্ব ইউক্রেনের চারটি বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চল ‘গণভোটের’ মাধ্যমে নিজেদের করেছে নিয়েছে রাশিয়া।
বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এই অভিযানের নিন্দা জানালেও, চীন এখন পর্যন্ত তা করেনি। এমনকি মস্কোর ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাতেও যোগ দেয়নি চীন। উল্টো রাশিয়ার আগ্রাসী হয়ে ওঠার জন্য পশ্চিম ও তাদের সামরিক জোট ন্যাটোকে দায়ী করে আসছে বেইজিং। অক্টোবরের শেষদিকে রাশিয়ান পক্ষকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।