যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উচ্চকক্ষ সিনেট এখনিও ঝুলন্ত অবস্থায়। তবে নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে (প্রতিনিধি পরিষদ) রিপাবলিকানরা জয়ের পথে আরও কিছুটা এগিয়ে গেছে।
সিএনএন-এর দেয়া সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, সিনেটে রিপাবলিকান দল ৪৯টি ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ৪৮টি আসন পেয়েছে। আর প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানরা পেয়েছে ২০৩টি আসন। অপরপক্ষে ডেমোক্র্যাটরা পেয়েছে ১৮৭ আসন।
নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিতে দরকার ২১৮টি আসন। সে হিসাবে রিপাবলিকানরা আর মাত্র ১৫টি বাগাতে পারলেই প্রতিনিধি পরিষদের দখল পেয়ে যাবে।
নেভাডা, জর্জিয়া ও অ্যারিজোনা- এই তিন রাজ্যের ফলের ওপর নির্ভর করছে কারা সিনেট নিয়ন্ত্রণ করবে- ডেমোক্র্যাটিক পার্টি না রিপাবলিকান।
বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা পর্যন্ত জর্জিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী ওয়ারনক ১৯ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯৩ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ওয়াকারের প্রাপ্ত ভোট ১৯ লাখ ২৭ হাজার ৪০২।
অ্যারিজোনা রাজ্যে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কেলি পেয়েছেন ৯ লাখ ২৬ হাজার ৮৮৫ ভোট। আর রিপাবলিকান প্রার্থী ম্যাস্টারসের প্রাপ্ত ভোট ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৯১৬।
অপর রাজ্য নেভাদায় রিপাবলিকান প্রার্থী ৪ লাখ ১৮ হাজার ৪৬১ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন। আর রিপাবলিকান করটেজ ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৮৬৬ ভোট পেয়েছেন।
মধ্যবর্তী এই নির্বাচনের আগে সিনেটে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের সমানসংখ্যক ৫০টি করে আসন ছিল। তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের টাই-ব্রেকিং ভোটের সুবাতে উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণটা ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটদের হাতেই ছিল।
প্রতিনিধি পরিষদে (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) রিপাবলিকানরা ২০১টি আসন পেয়ে জয়ের পথে রয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। আর বাইডেনের দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি পেয়েছে ১৮২টি আসন। প্রতিনিধি পরিষদে নিয়ন্ত্রণ পেতে দরকার ২১৮টি আসন।
যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয় মঙ্গলবার। এ নির্বাচনে সিনেটের ৩৫টি আসন ও প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের সবগুলোতে ভোট হয়েছে। তবে কিছু আসনে এখনও ভোটগ্রহণ চলছে। একইসঙ্গে ৩৬টি রাজ্যের গভর্নর পদেও ভোট হয়েছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে সিনেটে ৩৫টি আসনে ভোট হলে দুই দল ৪২ ও ৪৩টিতে এগিয়ে কীভাবে। উত্তর হলো ডেমোক্র্যাটরা যে ৪২টিতে এগিয়ে তার মধ্যে ভোটই হয়নি ৩৬টিতে। অর্থাৎ ভোট হওয়া আসনগুলোর মধ্যে ৬টিতে এগিয়ে ডেমোক্র্যাটরা। অন্যদিকে রিপাবলিকানরা যে ৪৩টিতে এগিয়ে এর মধ্যে ভোটই হয়নি ২৯টিতে। ভোট হওয়া ১৪টিতে এগিয়ে রিপাবলিকানরা।
হাউসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে কোনো দলের দরকার ২১৮টি আসন। ৫১টি আসন পেলে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় কোনো দল।
বর্তমানে ডেমোক্র্যাটরা দুই কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সিনেটে ৫১টি এবং হাউসে ২২০টি আসন রয়েছে তাদের। বিপরীতে সিনেটে ৫০ এবং হাউসে ২১২টি আসন আছে রিপাবলিকানদের।
গভর্নর নির্বাচনের প্রাপ্ত ফলাফলে রিপাবলিকানরা শুরুতে এগিয়ে থাকলেও ডেমোক্রেটরা এখন ব্যবধান কমিয়ে আনছে।
মধ্যবর্তী নির্বাচনে যেকোনো কক্ষে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার অর্থ হলো প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাধার সম্মুখীন হওয়া। রিপাবলিকানরা সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও আইন পাসে বিরোধিতার মুখে পড়বে বাইডেন প্রশাসন।
তবে এ নির্বাচনে রিপাবলিকানদের পক্ষে ‘লাল ঢেউ’ হওয়ার সম্ভাবনা ম্লান হয়ে গেছে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। নিম্ন কক্ষের কিছু রিপাবলিকান প্রতিনিধি এবারের নির্বাচনে হেরে যেতে পারেন, এমন সম্ভাবনা থাকায় প্রতিনিধি পরিষদ দলটির নিয়ন্ত্রণে গেলেও তাদের এগিয়ে থাকার ব্যবধান খুব বেশি হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।