ভিজিল্যান্ট স্টর্ম নামে নিজেদের মধ্যে এ যাবতকালের সর্ববৃহৎ সেনা মহড়া চালাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। এটি বন্ধ না হলে কঠোর জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এতেও কাজ না হওয়ায় গত দুই দিনে ৩০টির বেশি মিসাইল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে পিয়ংইয়ং। প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়াও পাল্টা মিসাইল ছুড়ে উত্তর কোরিয়াকে জবাব দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাইছেন কিম।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর ২০১৭ সালে কয়েকটি দূরপাল্লার মিসাইল ছুড়ে পিংইয়ং।
বুধ ও বৃহস্পতিবার অন্তত ৩০টি মিসাইল ছোড়ে পিয়ংইয়ং। যার একটি পাশের দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলে পড়ে। ১৯৫৩ সালে কোরিয়া যুদ্ধের অবসানের পর প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটল। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল এই পদক্ষেপকে ‘আঞ্চলিক আক্রমণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ায় বিরামহীনভাবে গোলাবর্ষণ করছে শত শত যুদ্ধবিমান। মহড়াটি শুরু হয় সোমবার, যা শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে পিয়ংইয়ং -এর আরচণে মহড়ার সময় বাড়ায় সিউল।
দক্ষিণ কোরিয়া বিমানবাহিনী জানায়, বার্ষিক এই সামরিক মহড়ার জন্য তাদের কয়েক মাসের পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। এটি সম্মিলিত বিমানবাহিনীর কৌশলগত ক্ষমতা জোরদার করবে।
মহড়ায় সিউল ও ওয়াশিংটন এফ-৩৫এ ও এফ-৩৫ বি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে। রাডারের চোখ ফাঁকি দেয়ার লক্ষ্যেই এগুলকে ডিজাইন করা হয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার কাছে পরমাণু অস্ত্র থাকলেও, দক্ষিণের নেই । যদিও বিমান শক্তির দিক থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া।
সিউলের থিংক ট্যাঙ্ক সংস্থা সেজং ইনস্টিটিউটের গবেষক চেওং সেওং চ্যাং বলেন, ’উত্তর কোরিয়ার বেশিরভাগ বিমানই পুরোনো। তাদের খুব কমই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান রয়েছে।’
চলতি বছরের গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কমান্ডোরা উত্তর কোরিয়ার সরকারকে উচ্ছেদের আদলে একটি মহড়া চালায়। পিয়ংইয়ং মনে করে কিম শাসনের অবসান ঘটাতে যুদ্ধ এফ-৩৫এ ও এফ-৩৫ বি যুদ্ধবিমানগুলো ব্যবহার করা হতে পারে।
সিউলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের অধ্যক্ষ ইয়াং মু জিন বলেন, ’রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক বিবেচনায় কিম চাইছেন মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে কঠোর নীতি থেকে যেন সরে আসে বাইডেন প্রশাসন। তিনি এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন যেন যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা বাইডেনের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে।’
অন্যদিকে কিম অভ্যন্তরীণ সমর্থন জোরদার করতে চাইছেন। জনগণকে দেখাতে চাইছেন, তিনি একজন শক্তিশালী নেতা।