সমর্থকদের কারণেই প্রাণে বেঁচে গেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খান। গুলি শুরুর পরপরই সহকর্মীরা ‘মানববর্ম’ তৈরি করে ফেলায় প্রাণরক্ষা হয় ইমরানের।
পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, ‘স্পষ্টতই এটা হত্যাচেষ্টা ছিল। ইমরান খান আঘাত পেয়েছেন, তবে তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল তার।
‘বন্দুকধারীকে যদি স্থানীয়রা না থামাত, তবে পিটিআইয়ের পুরো নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত।’
টেলিভিশনের প্রচার হওয়া ফুটেজে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ইমরান তার সমর্থকদের দিকে হাত নাড়ছেন। তারপর তাকে তার বুলেটপ্রুফ পিকআপ ট্রাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, সন্দেহভাজনকে পিটিআই সমর্থকরা জাপটে ধরেছে। তারপর তাকে পুলিশ সদস্যরা ধরে নিয়ে যায়।
- আরও পড়ুন: গুলিবিদ্ধ ইমরান, পাকিস্তানজুড়ে প্রবল বিক্ষোভ
- আরও পড়ুন: মিথ্যাবাদী ইমরানকে খুন করতে চেয়েছি: আটক সন্দেহভাজন
পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদের আল্লাহু চক এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকেলে ইমরানের গাড়িবহরে হামলা হয়। এতে পিটিআইয়ের আরও ছয় সদস্য আহত হয়েছেন। প্রাণ গেছে মুয়াজ্জাম নওয়াজ নামে এক কর্মীর।
ঘটনাস্থল থেকে অল্প সময়ে বন্দুকধারীকে আটক করে ফেলে পুলিশ। অন্য আহতদের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে করে ইমরানকে কাছের ওয়াজিরাবাদ ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওলজিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে লাহোরের শওকত খানুম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
- আরও পড়ুন: শেখ মুজিবের মতো লড়ছি: ইমরান খান
পাঞ্জাব পুলিশ বলছে, নিহত মুয়াজ্জাম নওয়াজ পিটিআইকর্মী। ইমরানের বহরকে স্বাগত জানাতে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন তিনি।
আহতদের মধ্যে পিটিআই নেতা আহমেদ চট্টা, চৌধুরী ইউসুফ এবং দলীয় কর্মী ওমর মেয়ার ও রশিদ আছেন। হামলায় সিনেটর জাভেদের গালে গুলি লেগেছে।
৭০ বছর বয়সী সাবেক তারকা ক্রিকেটার ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ ওঠে, এ সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় দখলে থাকা উপহার কেনাবেচা করেছেন ইমরান। বলা হচ্ছে, লেনদেন করা এসব উপহারের মূল্য ৬ লাখ ৩৫ হাজার ডলারের বেশি।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে ২১ অক্টোবর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরান খানকে ভোটে অযোগ্য ঘোষণা করে। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হবে বলেও জানায় কমিশন।
ওই রায়ের প্রতিবাদে ইমরানের সমর্থকরা বিক্ষোভ শুরু করেন; যা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় জর্জরিত পাকিস্তানকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে।
আগাম জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ২৫ অক্টোবর রাজধানীমুখী লং মার্চের ঘোষণা দেন ইমরান। তার নেতৃত্বে ২৮ অক্টোবর লাহোর থেকে লং মার্চ শুরু করে পিটিআই। ৪ নভেম্বর ইসলামাবাদ পৌঁছানোর কথা ছিল ইমরানের।
- আরও পড়ুন: ইমরানের লং মার্চ, ইসলামাবাদে রণসাজ
আইনসভায় অনাস্থা ভোটে এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় ইমরান খানকে। সেই থেকে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ করছেন ইমরান। তবে সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, আগামী বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরের আগে নির্বাচন হবে না।