ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘প্রকৃত দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দিয়ে তার পররাষ্ট্রনীতির ভূয়সী প্রশংসা করলেন ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে সারা বিশ্বকে জ্বালানিসহ নানা সংকটে ফেলে দেয়া দেশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মস্কোভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভলদাই ডিসকাশন ক্লাবের সম্মেলনে শুক্রবার তিনি এমন মন্তব্য করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিজনেস টুডে।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি একজন মহান দেশপ্রেমিক, যিনি কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও একটি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে সক্ষম।’
ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং বৈশ্বিক বিষয়ে দেশটির ক্রমবর্ধমান ভূমিকার বিষয়ে মোদি আত্মবিশ্বাসী বলে মন্তব্য করেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘সত্যিই ঘনিষ্ঠ মিত্র সম্পর্কের ভিত্তির ওপর চলে আসছে ভারত-রাশিয়ার কয়েক দশকের সম্পর্ক। ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কোনো সংকট নেই, একে অন্যকে সব সময়ই সমর্থন দিয়েছে। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে থাকার ব্যাপারেও আমি আত্মবিশ্বাসী।’
এশিয়ার এই দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের প্রসঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ভারতের কৃষি খাতের জন্য সার খুব প্রয়োজনীয় জিনিস। মোদি আমাকে সারের রপ্তানি বাড়াতে বলেছেন। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি।’
ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্তির পর ভারতের পথচলা কেমন ছিল সে প্রসঙ্গও তোলেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে মোদির নেতৃত্বে অনেক কিছুর উন্নয়ন হয়েছে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলোর সমালোচনা করে পুতিন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা বিশ্বব্যাপী আধিপত্যের আশায় একটি নোংরা, বিপজ্জনক এবং রক্তাক্ত খেলা খেলছে।’
সবশেষ গত সেপ্টেম্বরে এক সম্মেলনে সাক্ষাৎ হয়েছিল পুতিন-মোদির।
ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে রেখে অবশেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে হামলা চালানো শুরু করে রাশিয়া। প্রতিরোধ করছে ইউক্রেনের সেনারাও।
এরই মধ্যে কয়েক দফা ইউক্রেন-রাশিয়ার বৈঠক হয়েছে; তবে কার্যত যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
যুদ্ধ শুরুর পরই পশ্চিমাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করে। দেয়া হয় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও।
একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেলসহ নানা পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে সে পথে হাঁটেনি ভারত। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সময় নেয় দেশটি। পরে কম দামে রাশিয়ার তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
ইউক্রেনে হামলা শুরুর আগেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্থির হতে শুরু করে। এরপর দফায় দফায় বেড়েছে তেল-গ্যাসের দাম।