আগাম নির্বাচনের দাবিতে লং মার্চের আগে দলীয় কর্মীদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অন্যদিকে পিটিআইয়ের কর্মসূচি ঠেকাতে রাজধানী ইসলামাবাদে শক্ত অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। এতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত পাকিস্তানের সামনে নতুন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খান জানিয়েছেন, সমর্থকদের নিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোর থেকে রাজধানী ইসলামাবাদ পর্যন্ত একটি লং মার্চ করবেন তিনি।
লাহোরে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান বলেন, ‘শুক্রবার লাহোরের লিবার্টি স্কোয়ার থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত লং মার্চ হবে। সকাল ১১ টায় এটা শুরু হবে।’
- আরও পড়ুন: ভোটের মাঠে জনপ্রিয় ইমরানের ভবিষ্যৎ কী
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, এক সপ্তাহে ৩৮০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দিয়ে ৪ নভেম্বর রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছাবে ইমরানের লং মার্চ।
- আরও পড়ুন: ইমরানের লং মার্চে ইসলামাবাদ সংকটে
প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় বিদেশি নেতাদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার বিক্রি থেকে আয় আড়ালের অভিযোগে গত সপ্তাহে ইমরানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে ছোটখাট বিক্ষোভ করলেও, এবারই প্রথম এতো বড় কর্মসূচির আয়োজন করতে যাচ্ছেন পিটিআই প্রধান।
একে পাকিস্তানের ‘সবচেয়ে বড় স্বাধীনতা আন্দোলনের’ কর্মসূচি বলছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ডনের খবরে বলা হচ্ছে, ইমরানের নেতৃত্বে লং মার্চটি শাহদরা, গুজরানওয়ালা, শিয়ালকোট, গুজরাট, ঝিলাম এবং রাওয়ালপিন্ডিতে সমাবেশ করবে।
পিটিআই একটি টুইট বার্তায় জানিয়েছে, তাদের নেতা ইমরান বুধবার গভীর রাতে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ এলাহির সঙ্গে দেখা করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
چیئرمین پاکستان تحریک انصاف عمران خان اور وزیر اعلیٰ پنجاب چودھری پرویز الہٰی کی ملاقات: باہمی دلچسپی کے امور، سیاسی صورتحال اور پنجاب کے انتظامی معاملات پر بات چیتلانگ مارچ کے حوالے سے بھی تبادلہ خیال pic.twitter.com/bQHTThVKQJ
— PTI (@PTIofficial) October 26, 2022এদিকে ইসলামাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশের বিশেষ ইউনিট ইতোমধ্যে মোতায়েন হয়েছে। এ ছাড়া ৩০ হাজারের বেশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও লং মার্চ ঠেকাতে কাজ করবে।
এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে ডন বলছে, ইসলামাবাদে ১৩ হাজারের বেশি পুলিশের বিশেষ ইউনিট কাজ করবে, যারা কেবল বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করবে। তাদের হাতে থাকবে ৬১৬ টিয়ারগ্যাসের বন্দুক, ৫০ হাজার ৫০টি টিয়ারগ্যাসের শেল, ৬১১টি ১২-বোরের বন্দুক, ৩৬ হাজার ৭০০ রাউন্ড গুলি, ৪ হাজার প্রজেক্টাইলসহ ১৭টি পিপার বল বন্দুক, ১৫ হাজার স্প্রে পেইন্ট এবং ২ হাজার ৪৩টি মাস্ক এবং ৩৭৪টি গাড়ি।
আইনসভায় অনাস্থা ভোটে হেরে এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় ইমরানকে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আগাম জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে মে মাসের শুরুতে ‘আজাদি মার্চ’ শুরু করেছিলেন সাবেক তারকা ক্রিকেটার ইমরান খান। মার্চটি ব্যাপক সংঘর্ষের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পুলিশের সঙ্গে পিটিআই কর্মীদের সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয়েছিলেন। ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছিল অনেক সরকারি সম্পত্তি। গ্রেপ্তার হন অসংখ্য মানুষ।