বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে যারা    

  •    
  • ২১ অক্টোবর, ২০২২ ২৩:০৪

টোরি নেতৃত্ব প্রশ্নে ভোটে অংশ নেয়ার জন্য সহকর্মী এমপিদের কাছ থেকে অন্তত ১০০টি মনোনয়নের প্রয়োজন হবে প্রার্থীদের; যার অর্থ দৌড়ে তিনজনের বেশি অংশ নিতে পারবেন না। কারণ পার্লামেন্টে ৩৫৭ জন টোরি এমপি আছেন।

পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। এতে ক্ষমতাসীন কনসারভেটিভ দলের প্রধানের পদটি ফাঁকা হচ্ছে। পরবর্তী নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নির্ধারণে এখন আরেকটি নেতৃত্ব নির্বাচন হবে। ভোট আগামী ২৮ অক্টোবরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা

এতে অংশ নেয়ার জন্য সহকর্মী টোরি এমপিদের কাছ থেকে অন্তত ১০০টি মনোনয়নের প্রয়োজন হবে প্রার্থীদের; যার অর্থ দৌড়ে তিনজনের বেশি অংশ নিতে পারবেন না। কারণ পার্লামেন্টে ৩৫৭ জন টোরি এমপি আছেন।

বাস্তবে দুই জনের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে; অথবা সম্ভবত একজন, যিনি দলীয় সদস্যদের ভোট ছাড়াই নেতা হয়ে উঠবেন।

এই লড়াইয়ে কে কে থাকবেন, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন, ঋষি সুনাক, পেনি মর্ডান্ট, বরিস জনসন, কেমি ব্যাডেনোচ, সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস আলোচনায় থাকলেও, শুক্রবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার কথা জানিয়েছেন তিনি।

ঋষি সুনাক

চলতি গ্রীষ্মের শুরুতে বরিস জনসনকে নেতার পদ থেকে প্রতিস্থাপনের দৌড়ে ছিলেন ঋষি সুনাক। রক্ষণশীল এমপিদের সর্বাধিক সমর্থন জিতে লিজ ট্রাসের সঙ্গে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।

দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রচারে তিনি সতর্ক করেছিলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বীর (ট্রাসের) কর পরিকল্পনা অর্থনীতির ক্ষতি করবে। তবে তার বার্তা পার্টির সদস্যদের কাছে অতোটা গ্রহণযোগ্য হয়নি। তিনি ২১ হাজার ভোটে হেরে যান।

ঋষি সুনাক

সুনাক একবারই রিচমন্ডের নর্থ ইয়র্কশায়ার নির্বাচনি এলাকা থেকে ২০১৫ সালে এমপি হয়েছিলেন। ওয়েস্টমিনস্টারের বাইরে খুব কম মানুষই তাকে সমর্থন করে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজকোষের চ্যান্সেলর হয়েছিলেন তিনি।

লকডাউন চলাকালীন অর্থনীতিকে সচল রাখতে বিপুল অর্থ ব্যয় করে করোনা মহামারি সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল সুনাককে।

স্ত্রীর কর বিষয়ক বিতর্কের কারণে খ্যাতি ক্ষুণ্ন হয় সুনাকের। এর কিছু দিনপর লকডাউন নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানা গুনতে হয়েছিল তাকে।

কনজারভেটিভ এমপি অ্যাঞ্জেলা রিচার্ডসন ইতোমধ্যে সুনাকের প্রতি নিজের সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ঋষি সুনাকের নেতৃত্বে গ্রীষ্ম কাটিয়ে তার যোগ্যতার বিষয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হয়নি৷’

পেনি মর্ডান্ট

পেনি মর্ডান্ট চলতি সপ্তাহের শুরুতে ‘প্রধানমন্ত্রী’ হওয়ার স্বাদ পেয়েছিলেন। সেদিন তিনি পার্লামেন্টে একটি জরুরি প্রশ্নের সময় লিজ ট্রাসের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন।

আত্মবিশ্বাসী মর্ডান্টের মধ্যে অনেকেই নেতৃত্বের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন। দলের নেতৃত্ব প্রশ্নে সবশেষ দৌড়ে ছিলেন মর্ডান্ট। সহকর্মীরা তাকে ভালোই সমর্থন দিয়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তে ছিটকে পড়েন তিনি।

লিজ ট্রাসের সমর্থন নিয়ে হাউস অফ কমন্সের নেতা এবং প্রিভি কাউন্সিলের লর্ড প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন মর্ডান্ট। যার অর্থ, নতুন রাজার জন্য অ্যাকসেসন কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করেছিলেন তিনি।

পেনি মর্ডান্ট

২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়েন মর্ডান্ট। ডেভিড ক্যামেরনের অধীনে সশস্ত্রবাহিনীমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

এমপি জন ল্যামন্ট, মারিয়া মিলার, বব সিলি এবং ড্যামিয়ান কলিন্স সমর্থন করছেন মর্ডান্টকে।

বরিস জনসন

মন্ত্রী ও এমপিদের গণবিদ্রোহের মুখে জুলাইয়ে বরিস জনসন পদত্যাগের ঘোষণা দিতে বাধ্য হন। এতে ডাউনিং স্ট্রিটে লকডাউন পার্টিসহ নানা বিতর্কের অবসান ঘটে। ক্রিস পিনচারকে ডেপুটি চিফ হুইপ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে দলীয় সমালোচনায় পড়েন তিনি।

অক্সব্রিজের এমপি বিশেষাধিকার কমিটির তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ১০ নম্বরে লকডাউনের বিধিনিষেধগুলো অনুসরণ করা হয়েছিল বলে তিনি কমন্সকে বিভ্রান্ত করেছেন। জনসনসহ অনেককে পরে কোভিডবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানা করা হয়েছিল।

বরিস জনসন

এতসবের পরও এমপি এবং দলের সাধারণ সদস্যের মধ্যে জনসনের জনপ্রিয়তা আছে। তার দীর্ঘদিনের সমর্থক রাজনীতিবিদ নাদিন ডরিস মনে করছেন, জনসনের ফিরে আসা উচিত। কারণ তিনি ২০১৯ সালের নির্বাচনে ব্রিটিশ জনগণের কাছ থেকে ম্যান্ডেট পেয়েছেন।

অন্যান্য এমপি যারা ইতোমধ্যে জনসনের ১০ নম্বরে ফিরে আসার পক্ষে এসেছেন তাদের মধ্যে আছেন, পল ব্রিস্টো, ব্রেন্ডন ক্লার্ক-স্মিথ, আন্দ্রেয়া জেনকিন্স এবং মাইকেল ফ্যাব্রিক্যান্ট।

কেমি ব্যাডেনোচ

সাম্প্রতিকতম নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেমি ব্যাডেনোচ ‘বিস্ময়কর’ সফল প্রার্থী। যদিও তিনি জিততে পারেননি তবে এতে তার প্রোফাইল দারুণ সমৃদ্ধ হয়েছে।

একজন জুনিয়র মন্ত্রী হয়েও সিনিয়র কনজারভেটিভ মাইকেল গভের সমর্থন জিতেছিলেন তিনি। তথাকথিত ‘ওক’ সংস্কৃতির (জাতিগত কুসংস্কার এবং বৈষম্য সম্পর্কে সতর্কতা) ওপর তার আক্রমণাত্মক অবস্থানের কারণে আলোচনায় আসেন ব্যাডেনোচ।

কেমি ব্যাডেনোচ

দক্ষিণ লন্ডনের উইম্বলডননে জন্ম ব্যাডেনোচের। বেড়ে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্র এবং নাইজেরিয়ায়। এই দুই দেশে তার মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক মা লেকচারার ছিলেন।

পার্লামেন্টে আসার আগে তিনি স্যাফরন ওয়ালডেনের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংক কউটস এবং দ্য স্পেক্টেটর ম্যাগাজিনে তিনি কাজ করেছেন। এখন তিনি সরকারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান

সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। তার পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে পদত্যাগ করেন ট্রাস। যদিও ব্র্যাভারম্যানের চলে যাওয়ার পেছনে ছিল বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ। তারপরও ব্র্যাভারম্যানের পদত্যাগপত্র অভিবাসন নিয়ে মতবিরোধের ইঙ্গিত দেয়।

ব্র্যাভারম্যান সামাজিক ইস্যুতে তার দলের ডানপন্থীদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় ছিলেন। তিনি বলতেন, অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় স্থানান্তর করা তার স্বপ্ন।

সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান

সাবেক ব্যারিস্টার ব্র্যাভারম্যান একজন ব্রেক্সিট সমর্থক। বরিস জনসনের সরকারে অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন তিনি। পদত্যাগের পর তিনি নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দাঁড়িয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে তিনি বাদ পড়েন।

কেনিয়া এবং মরিশাস থেকে ১৯৬০ এর দশকে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন তার বাবা-মা। দুজনেই জড়িত ছিলেন স্থানীয় রাজনীতিতে। ব্র্যাভারম্যানের মা ১৬ বছর কাউন্সিলর ছিলেন।

ব্রেভারম্যান ছিলেন প্রথম ক্যাবিনেট মন্ত্রী যিনি আইন সংস্কারের পর মাতৃত্বকালীন ছুটি নেন। সংস্কার হওয়া আইনে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে বেতন পাবেন মন্ত্রীরা। এটা না হলে ব্র্যাভারম্যান পদত্যাগ করতেন বলে গুঞ্জন আছে।

বেন ওয়ালেস

নেতৃস্থানীয় অনেক টোরি দলের বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্ত হলেও, প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে মোটামুটি সবাই নিরাপদ ব্যক্তিত্ব হিসেবে দেখেন।

তবে শুক্রবার বেন ওয়ালেস দলের নেতৃত্ব নির্বাচন ইস্যুতে অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। জানিয়েছেন, বর্তমান দায়িত্বেই (প্রতিরক্ষামন্ত্রী) স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন তিনি।

ওয়ালেস বলেন, ‘কনজারভেটিভ দলের প্রধান হিসেবে তিনি বরিস জনসনকেই যোগ্য মনে করছি। কারণ ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি সরকার গঠনে পর্যাপ্ত ম্যান্ডেট অর্জন করেছিলেন।

বরিস জনসনের জবাবদিহিতার অভাব ছিল স্বীকার করে ওয়ালেস বলেছেন, সমালোচনা সত্ত্বেও প্রতিরক্ষা বিভাগে বিনিয়োগের তার অনন্য রেকর্ড আছে।

বেন ওয়ালেস

সেনাবাহিনীর সাবেক এই সদস্য ইউক্রেন যুদ্ধের পর ব্যাপক আলোচিত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। কিয়েভকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সমর্থন করছে লন্ডন।

এর আগে দলের নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় লিজ ট্রাসকে সমর্থন করেছিলেন বেন ওয়ালেস।

এ বিভাগের আরো খবর