ইন্দোনেশিয়ায় অন্তত ১০০ শিশুর আকস্মিক মৃত্যুর পর দেশটিতে সব ধরনের সিরাপ এবং তরল ওষুধের বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় কাশির সিরাপ খেয়ে ৭০ শিশুর মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ঘটল এমন ঘটনা।
ইন্দোনেশিয়া সরকার বলছে, কিছু সিরাপে এমন উপাদান পাওয়া গেছে যেগুলো কিডনি অকার্যকরের (অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি-একেআই) জন্য দায়ী। একেআইয়ের কারণে চলতি বছর ৯৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ওষুধটি আমদানি করা নাকি স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত হয়েছে তা অবশ্য স্পষ্ট করেনি ইন্দোনেশিয়া সরকার।
ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার জানান, একেআই-এ আক্রান্ত ২০০ শিশুর খবর তাদের কাছে আছে। এসব শিশুর বেশিরভাগ পাঁচ বছরের কম বয়সী।
চলতি মাসের শুরুর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও গাম্বিয়াতে অন্তত ৭০ শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত চারটি কাশির সিরাপ সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সতর্কতা জারি করে।
- আরও পড়ুন: ভারতীয় কাশির সিরাপ খেয়ে ৬৬ শিশুর মৃত্যু
ডব্লিউএইচও জানায়, ভারতীয় একটি ওষুধ কোম্পানির তৈরি এসব সিরাপে ‘অগ্রহণযোগ্য পরিমাণে’ ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই সিরাপগুলো ‘তীব্র কিডনি জটিলতার সঙ্গে সম্ভাব্যভাবে যুক্ত’ বলে জানায় সংস্থাটি।
ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বুদি গুণাদি সাদিকিন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত কিছু ওষুধেও একই রাসায়নিক যৌগ মিলেছে।
‘পাঁচ বছরের কম বয়সী একেআই শিশু রোগীদের ব্যবহৃত কিছু সিরাপে ইথিলিন গ্লাইকোল এবং ডাইথাইলিন গ্লাইকোল রয়েছে। যেগুলো সেখানে থাকার কথা ছিল না। আর থাকলেও খুব কম পরিমাণে থাকার কথা।’
তবে কতগুলো ঘটনায় বিষাক্ত ওষুধ রয়েছে, তা তিনি জানাননি।
ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাম্বিয়ায় ব্যবহৃত কাশির সিরাপগুলো স্থানীয়ভাবে বিক্রি হয় না।
গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির মহামারি বিশেষজ্ঞ ডিকি বুডিম্যান বলেন, ‘প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। এ ধরনের ঘটনার সময় শুরুতে যা দেখা যায় তা হলো আইসবার্গের ডগা; যার মানে আরও অনেক বেশি শিকার হতে পারে।’
ইন্দোনেশিয়ান কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত অসুস্থ শিশুদের সঙ্গে যুক্ত সিরাপের ব্র্যান্ড বা প্রকার প্রকাশ করেনি। তারা কেবল সব ধরনের সিরাপ, তরল ওষুধের বিক্রয় এবং প্রেসক্রিপশন সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে।