চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী। এদের মধ্যে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার কলকাতার সল্টলেক করুণাময়ী এপিসি ভবনের সামনে চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে টেট (টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট) উত্তীর্ণ কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল চাকরি প্রার্থীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করলে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নেন তারা।
কলকাতার সল্টলেক করুণাময়ীতে বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের এক প্রতিনিধি বলেন, ‘হয় পর্ষদ আমাদের চাকরি দেবে, নয় এখান থেকে আমাদের লাশ তুলে নিয়ে যাবে।’পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘২০১৪ সালে প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ এই পরীক্ষার্থীরা দুবার ইন্টারভিউয়ের পরও তালিকাভুক্ত হননি। তারা পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগে নিয়োগ পেতে চান। এই দাবি অন্যায্য। দুবার পরীক্ষা দিয়ে যারা প্যানেল ভুক্ত হতে পারেননি, তাদের পরীক্ষায় বসতে হবে। বেআইনিভাবে সুযোগ দেয়া সম্ভব নয়।’
বিক্ষোভরত এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘২০১৪ সালে টেট পাস প্রশিক্ষিতদের ধাপে ধাপে নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের নিয়োগ হয়নি। নিয়োগের দাবিতে এখানে শান্তিপূর্ণভাবে অনশন করছি।
‘মানিক ভট্টাচার্য দুর্নীতি করেছেন । উনি দুর্নীতির দায়ে জেলে গিয়েছেন । ওনার জন্য আজকে আমাদের রাস্তায় বসতে হয়েছে। বর্তমান পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালও আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। গোটা রাজ্যবাসী বুঝে গিয়েছেন, আমরা দুর্নীতির শিকার হয়েছি।’
পর্ষদ সভাপতির অভিযোগ, চাকরি প্রার্থীরা অন্যায্য দাবি করছেন। আইন মেনে চাকরি হবে। কিন্তু অনেক চাকরি প্রার্থীর বয়স ৪০ পেরিয়ে গেছে। তাই আর ইন্টারভিউ নয় সরাসরি নিয়োগ চাইছেন তারা।
বুধবার সকালেও করুণাময়ী চত্বরে দেখা যায়, চাকরিপ্রার্থীরা অনশন করছেন। খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় বসে আছেন তারা। অনেকে রাস্তায় শুয়ে পড়েছেন। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকেই।
এখন পুলিশের চোখ রাঙ্গানি অগ্রাহ্য করে কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থীর এই মরণপণ আন্দোলন কত দিন চলবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ সফররত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিচারাধীন মামলা, কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’