ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার দখলকৃত খেরসন অঞ্চলের কিছু অংশ ফিরিয়ে নিতে আক্রমণ শুরু করেছে।
ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের দায়িত্বে থাকা রুশ কমান্ডার সের্গেই সুরোভিকিন এরই মধ্যে জানিয়েছেন, বেসামরিক নাগরিক ও রুশ সেনাদের জন্য খেরসনের পরিস্থিতি ‘খুব কঠিন’ হয়ে উঠেছে।
রাশিয়া বলছে, এরই মধ্যে লড়াই চলতে থাকা খেরসনের অঞ্চলগুলো থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে কাজ শুরু হয়েছে।
১০ অক্টোবর ইউক্রেনের সামরিক অভিযানের নেতৃত্বের দায়িত্ব পাওয়া রুশ বিমান বাহিনীর জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে চেচনিয়া ও সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে কাজ করার। তবে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের দায়িত্ব পাওয়ার শুরুতেই ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে পুরো ইউক্রেনে হামলা চালানোর চমক দেখালেও অল্প সময়ের মধ্যেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেন তিনি। সুরোভিকিন নিজেও তা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেছেন, বেসামরিক বাসিন্দা (খেরসন অঞ্চলের) ও রাশিয়ার সেনাদের উভয়ের জন্যই খেরসনের পরিস্থিতি ‘খুব কঠিন’।
তবে একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন রুশিয়া ২৪-কে বলেছেন, ‘রুশ সেনাবাহিনী খেরসনের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানান্তর নিশ্চিত করবে।’
তিনি বলেন, ‘শত্রুরা রুশ সেনা অবস্থানে আক্রমণ করার চেষ্টা ত্যাগ করছে না।’
সুরোভিকিন জানান, পূর্ব ইউক্রেনের কুপিয়ানস্ক, লেম্যান শহর, মাইকোলাইভ ও ক্রিভি রিহ-এর মধ্যবর্তী উত্তর খেরসন এলাকায় রুশ সেনা অবস্থানে ক্রমাগত হামলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের এলাকার পরিস্থিতিকে উত্তেজনাপূর্ণ বলা যেতে পারে।’
খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার মনোনীত প্রধান ভ্লাদিমির সালদো জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর আক্রমণের ঝুঁকির কারণে কর্তৃপক্ষ কিছু বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সালদো এক ভিডিও বিবৃতিতে বলেন, ‘ইউক্রেনের সেনারা একটি বড় আকারের আক্রমণের জন্য তাদের বাহিনীকে তৈরি করছে।’
তিনি সাধারণ মানুষদের সামরিক এলাকা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যেখানে সামরিক বাহিনী কাজ করে, সেখানে বেসামরিক মানুষদের জন্য কোনো স্থান নেই। রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে দিন।’
যদিও লড়াইয়ের শুরুর থেকেই ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় পক্ষই বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।
খেরসন হলো চারটি আংশিক-অধিকৃত ইউক্রেনীয় প্রদেশের একটি, যা রাশিয়া গণভোটের মাধ্যমে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে। যদিও পশ্চিমারা এর স্বীকৃতি দেয়নি। এটি রুশ ভূখণ্ডের সঙ্গে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে স্থলপথে যুক্ত হওয়ার একমাত্র পথ।
এই অঞ্চলে রুশ বাহিনী গত কয়েক সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার পিছিয়ে গেছে। অথচ অভিযানের শুরুর দিকে রাশিয়া প্রায় বিনা বাধায় খেরসন দখল করে নিয়েছিল।