ভারতের কেরালা রাজ্যে ভাগ্য নরবলির ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে নরবলির মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন এক দম্পতি। শুধু বলি দিয়েছেন, তা-ই নয়। মানুষের মাংসও খেয়েছেন এই দম্পতি।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালা রাজ্যের কোচিতে।
মঙ্গলবার এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর নরবলি দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত দম্পতিকে ও মোহাম্মদ শফি নামের তাদের এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে কোচি পুলিশ।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযুক্ত দম্পতি ভগবল সিং ও তার স্ত্রী লায়লা শুধু নরবলি দিয়েই ক্ষান্ত হননি, এক নারীর স্তন কেটে নিয়ে তাকে রক্তশূন্য করে মেরেছেন এবং আরও এক নারীকে ৫৬ টুকরা করে রান্না করে খাওয়ার পর বাকি অংশ মাটিতে পুঁতে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
একটি নিখোঁজ মামলার তদন্তে নেমে কোচি পুলিশের এই ঘটনা উন্মোচন করে।
গত জুন মাসে কেরলের এর্নাকুলাম থেকে রোসোলিন এবং সেপ্টেম্বরে পদ্মা নামে দুই নারী নিখোঁজ হন। আর এই দুই নারীর খোঁজ করতে গিয়ে নরবলির ঘটনা সামনে চলে আসে।
বুধবার কোচির পুলিশ কমিশনার সি এইচ নাগারাজু বলেন, প্রধান অভিযুক্ত মো. শফি। ওই দম্পতিকে সে বুঝিয়েছিল নরবলি করলে তাদের অবস্থার উন্নতি হবে। যখন তারা দেখল প্রথম বলিতে তাদের আর্থিক অবস্থার বিশেষ কিছু উন্নতি হয়নি। তারা ভেবেছিল প্রথমবারের বলিতে হয়তো কোনো ভুল হয়েছে। আরেকটি বলি দিতে হবে।
ওই নারীদের খুন করে দেহ টুকরা টুকরা করে রান্না করে কিছু খাওয়ার পর বাকি অংশ মাটিতে পুঁতে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তারা। আর পুরো ঘটনাটি ঘটেছে মূল অভিযুক্ত মোহাম্মদ শফির পরামর্শে।
সাংবাদিক সম্মেলনে নাগারাজু আরও বলেন, মূল অভিযুক্ত মোহাম্মদ শফির অতীতে অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। শফির নামে আটটি থানায় খুন-ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।
অর্থের লোভ দেখিয়ে শফি ওই দম্পতিকে ফাঁদে ফেলেছে । অর্থের লোভে ওই দম্পতি নরবলি দিয়েছে। মোহাম্মদ শফি আসলে একজন সাইকোপ্যাথ। পেশায় ম্যাসাজ থেরাপিস্ট মোহাম্মদ শফি নরবলি দিয়ে আর্থিক উন্নতির জন্য ওই দম্পতির থেকে দেড় লাখ টাকা নেয় আচার-অনুষ্ঠান করবে বলে।
তারপর প্রলোভন দেখিয়ে পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়সের দুই নারীকে অপহরণ করে এনে ওই দম্পতির বাড়িতে আটকে রাখে। শফির কথামতো জুন মাসে রোসোলিন নামের এক নারীকে বলি দেয় ওই দম্পতি।
কিন্তু কোনো আর্থিক উন্নতি না হওয়ায় শফির পরামর্শে সেপ্টেম্বরে তারা দ্বিতীয় বলি দেয় পদ্মাকে। যৌনতার বিষয়েও বিকৃত কামনা ছিল শফির। নারীদের গোপনাঙ্গেও আঘাত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার অভিযুক্ত তিনজনকে আদালতে তোলা হলে আদালত ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।