খাদ্য ও জ্বালানির দামের কারণে ভারতের মূল্যস্ফীতি এক বছর আগের তুলনায় সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ বেড়েছে; যা চলতি বছরের এপ্রিলের পর সবচেয়ে বেশি।
ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স অফিসের প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বরে ভোক্তা মূল্য সূচকভিত্তিক মূল্যস্ফীতি (সিপিআই) এক বছর আগের তুলনায় ৭.৪১ শতাংশে বেড়েছে; আগস্টে যা ছিল ৭ শতাংশ।
সর্বশেষ এই তথ্য নীতিকে আরও কঠোর করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে (আরবিআই) চাপে ফেলবে। কেবল তা-ই নয়, অর্থনীতির খরচেও তা শক্ত প্রভাব ফেলবে। চলতি বছর চার দফায় সুদের হার বাড়িয়েও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন আরও কঠোর নীতি গ্রহণ করতে হবে। অনুসরণ করতে হবে পশ্চিমের প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলোর নীতিকে, যেগুলো মন্দার মধ্যেও যেকোনো মূল্যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের নীতিতে হাঁটছে।
আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস গত মাসে জানিয়েছিলেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এমন নীতিতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক হাঁটবে, যেগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাঁধাগ্রস্ত করবে না।
গত দুই বছরে পরিবর্তনশীল বৃষ্টিপাতের ধরন এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণে বিশ্বজুড়েই খাদ্য সরবরাহে আঘাত হেনেছে। গম, চাল, ডাল, শাক-সবজির মতো নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী।
ভারতের দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণি ইতোমধ্যেই করোনা মহামারি জেরে অর্থনৈতিক ধাক্কায় ধুঁকছে। কারণ এই দুই শ্রেণির মানুষের আয়ের বড়ে একটা অংশ ব্যয় হয় খাবারের পেছনে। খাদ্য ও জ্বালানির দাম বাড়ায় গৃহস্থালির বাজেট মিলাতে হিমশিম খাচ্ছে তারা।
ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স অফিসের তথ্য ঘেঁটে আরও দেখা গেছে যে গ্রামীণ মুদ্রাস্ফীতি টানা চতুর্থ মাসে শহুরে মূল্যের উপরে।
মূল্যস্ফীতি কমাতে ভারত সরকার মৌলিক খাদ্য সামগ্রী রপ্তানিতে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তারপরও চলতি বছর ভোক্তামূল্য আরবিআই-এর সর্বোচ্চ সহনশীল স্তরকে পাশ কাটিয়েছে।
মুদ্রাস্ফীতির পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো রুপির মান পড়ে যাওয়া। ডলারের বিপরীতে রুপির দর ৭৯-৮২ তে উঠানামা করছে। বছরজুড়ে ডলারের বিপরীতে রুপি দর হারিয়েছে ১০ শতাংশের বেশি। এতে আমদানি খাতে শক্ত চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে আরবিআই।
দেশীয় মুদ্রার ক্ষতি ঠেকাতে ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রায় ১০০ বিলিয়ন খরচ করেছে ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।