চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের বিতর্ক প্রস্তাব না করার পক্ষে ভোট দিয়েছে কাতার, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে ওই বিতর্ক করার কথা বলেছিল।
বার্ত সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, উইঘুর ইস্যুতে বিতর্ক প্রস্তাব ১৯-১৭ ভোটে পরাজিত হয়। ১১টি দেশ কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত দেয়নি। এসব দেশকে স্বাগত জানিয়েছে চীন। বিষয়টিকে অন্যরা ‘লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেছে।
প্রস্তাবের বিপক্ষে এবং চীনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বেশিরভাগ মুসলিম দেশ। এসব দেশের মধ্যে পাকিস্তান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, সোমালিয়া অন্যতম।
প্রস্তাবটি জাতিসংঘে এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং যুক্তরাজ্য।
যারা প্রস্তাবটিতে ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে তাদের মধ্যে ভারত ও ব্রাজিল অন্যতম। এসব দেশকে স্বাগত জানিয়েছে চীন।
চীনের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং টুইটে বলেছেন, ‘এটি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি বিজয় এবং সত্য ও ন্যায়ের বিজয়।’
তিনি বলেন, ‘অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মিথ্যা এবং হস্তক্ষেপ করার জন্য, জবরদস্তি ও অপমান করার জন্য মানবাধিকারকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়।’
উইঘুরদের দমনে ২০১৭ সাল থেকে তৎপরতা জোরদার করে বেইজিং। ১৪০ কোটি মানুষের দেশ চীনের মাত্র দেড় শতাংশের বাস শিনজিয়াংয়ে। অথচ সারা দেশে যত মানুষ গ্রেপ্তার, তার ২১ শতাংশই এ প্রদেশে। গত পাঁচ বছরে অঞ্চলটিতে আগের পাঁচ বছরের তুলনায় গ্রেপ্তারের হার বেড়েছে ৩০৬ শতাংশ।
২০১৭ সাল থেকে অঞ্চলটির দুই-তৃতীয়াংশ মসজিদ চীনা সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
উইঘুরদের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের আচরণকে আগেই ‘জেনোসাইড’ আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডস এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
উইঘুর ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও কানাডা।
বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীনা সরকার। বেইজিংয়ের দাবি, উগ্রবাদ ঠেকাতে শিবিরগুলোতে উইঘুর মুসলমানদের কারিগরি শিক্ষা দেয়া হয়।