নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ি ঢলে ডুবতে থাকা ১০ জনের জীবন বাঁচিয়ে সবার প্রশংসা পাচ্ছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ির তেশিমিলা গ্রামের মুসলিম বাসিন্দা মোহাম্মদ মানিক।
বুধবার পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দিতে আসেন মালবাজার শহর ও স্থানীয় চা বাগানের দুর্গাপূজা কমিটির উদ্যোক্তারা। বিসর্জন দেখতে নদীর ধারে পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষের ভিড় জমান।
বিসর্জন চলাকালীন আচমকা হড়পা বানে (পাহাড়ি ঢল) মাল নদীর পানি ফুলে ওঠে। পাহাড় থেকে নেমে আসে তীব্র স্রোত। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৫০ থেকে ৬০ জন নদীর স্রোতে ভেসে যান।
তেশিমিলা গ্রামের বাসিন্দা মো. মানিক প্রতিবছরের মতো পরিবার নিয়ে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেখতে যান। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মানিকও। মানুষকে জলের স্রোতে ভেসে যেতে দেখে ২৫ থেকে ৩০ ফুট উঁচু পাড় থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি।
দক্ষ উদ্ধারকারীর মতো ১০ জনের প্রাণ বাঁচিয়ে মর্মান্তিক এই ঘটনার পরেও সবার কাছে নায়ক হয়ে ওঠেন মো. মানিক।
মোহাম্মদ মানিক ১০ জনের প্রাণ বাঁচালেও হড়পা বানে এখনো পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে । হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে মাল নদীতে মাঝেমধ্যে হড়পা বাগানের নজির রয়েছে। খুব সম্প্রতি হড়পা বান হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ নদীর চরিত্র জেনেও প্রশাসন যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়নি। অন্যথায় এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলে তাদের দাবি। এখনো অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। তল্লাশি অভিযান চলছে ।
এদিকে এই শোকের আবহে শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলার দুর্গা পূজার কার্নিভাল বাতিল করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।