ইরানে চলমান বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ইরানি অ্যাকটিভিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা শনিবার পুরো দেশে সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তেহরানের মর্যাদাপূর্ণ শরিফ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির অধ্যাপকরা ২ অক্টোবর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে ৮ অক্টোবর শনিবার দেশটির সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ করার জন্য দেশের সব ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়েছে।
তবে এ আহ্বান জানানো হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কারণ দেশটির মূলধারার গণমাধ্যমগুলো সেন্সরশিপের কারণে বিক্ষোভের খবর প্রচার করতে পারে না।
শরিফ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি ক্যাম্পাসের ভেতর শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভরত অনেক ছাত্রকে আটক করা হয়েছে, যেখানে আইন অনুযায়ী ক্যাম্পাসের ভেতরে সশস্ত্র বাহিনীর প্রবেশ নিষিদ্ধ।
ইরানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, শুধু ক্যাম্পাসেই নয়, অনেক ছাত্রকে তাদের বাড়ি সহ অন্যান্য স্থান থেকে আটক করা হয়েছে।
এসব ঘটনারই বিচ্ছিন্নভাবে না করে সামগ্রিকভাবে প্রতিবাদ করতে চাইছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনা ইরানসহ বিশ্বের অনেক দেশেই প্রতিবাদ হয়েছে
আর কয়েকদিনের মধ্যেই ইরানে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও অনেক স্থানেই স্কুল ছাত্রীরা বিক্ষোভ করছে, মাথার হিজাব খুলে ফেলছে ও ক্লাসে যোগ দিতে অস্বীকার করেছে। তারা স্কুলেও বিক্ষোভ করেছে এবং স্কুল থেকে ফেরার পথেও বিক্ষোভ করেছে, স্লোগান দিয়েছে।
অনেক শিক্ষার্থীই তাদের মাথার স্কার্ফ জ্বালিয়ে দিয়েছে।
এদিকে ইরানি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ দমনে এতোই কঠোর হয়েছে যে সরকারের অনেক কট্টর সমর্থকদের পক্ষেও তা হজম করা কঠিন হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
অসলো-ভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের (আইএইচআর) দেয়া তথ্যানুসারে, প্রায় তিন সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে ২৯ জন সাংবাদিক, ২০ জন অধিকারকর্মী এবং ১৯ জন শিক্ষক সহ অন্তত ১ হাজার ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আইএইচআর মঙ্গলবার জানিয়েছে যে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৯ শিশুসহ অন্তত ১৫৪ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।
এদিকে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বৃহস্পতিবার মাহসা আমিনির মৃত্যুর নিন্দা করেছে এবং মাহসার মৃত্যুর সঙ্গে যারা জড়িত এবং বিক্ষোভ দমনে যারা কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে।