ডেনমার্কের পর রাশিয়া থেকে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইনে চতুর্থ ত্রুটি খুঁজে পেল সুইডেন। দেশটির কোস্টগার্ড বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এতে গ্যাসলাইনের চারটি জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পাইপলাইনে ত্রুটির পেছনে ওয়াশিংটনের হাত রয়েছে বলে দাবি মস্কোর। চতুর্থ ছিদ্র পাওয়ায় খবর প্রকাশের পর পরই তারা জানায়, যে অঞ্চলে ছিদ্র পাওয়া গেছে সেটির নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের হাতে।
প্রতিক্রিয়ায় মস্কোর দাবি উড়িয়ে এ ধরনের অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলেছে ওয়াশিংটন।
শুরুর দিকে বলা হচ্ছিল, বাল্টিক সাগরের তলদেশের পাইপলাইনগুলোর তিনটি জায়গায় ছিদ্র রয়েছে; যেগুলোর দুটি নর্ড স্ট্রিম ১ এবং নর্ড স্ট্রিম ২-এর কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।
তবে সুইডিশ কোস্টগার্ডের মুখপাত্র জেনি লারসন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘সাগরের তলদেশে অবকাঠামোগুলোতে চারটি ছিদ্র পাওয়া গেছে। দুটি সুইডেনের অর্থনৈতিক অঞ্চলে; বাকিগুলো ডেনমার্কের বিশেষ অঞ্চলে।
সম্প্রতি নর্ড স্ট্রিম ১ এবং নর্ড স্ট্রিম ২ পাইপলাইনে গ্যাসের চাপ কমে যায়। অনুসন্ধানে গত সোমবার পাইপলাইনে ছিদ্র খুঁজে পায় ডেনিশ কর্তৃপক্ষ।
ড্যানিশ ও সুইডিশ কর্তৃপক্ষ পরে জানায়, বোর্নহোম দ্বীপের কাছে সাগরের নিচে কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতেই পাইপলাইনে ছিদ্র হয়েছে।
এর পরপর রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও সুইডেন দাবি করে, ‘ইচ্ছাকৃত’ কেউ বা কারা পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
পাইপলাইনে বিস্ফোরণকে ‘নাশকতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে ইইউ। সতর্ক করেছে ব্লকটি বলেছে, ইউরোপীয় জ্বালানি অবকাঠামোতে যেকোনো ‘ইচ্ছাকৃত’ ব্যাঘাত অগ্রহণযোগ্য। এর প্রতিক্রিয়া কঠিন হবে।’
ইউক্রেন সংঘাত শুরু পর থেকে মস্কো এবং ব্রাসেলসের মধ্যে জ্বালানি স্থবিরতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পাইপলাইনগুলো।
নর্ড স্ট্রিম ১ এবং ২ পাইপলাইন রাশিয়াকে জার্মানির সঙ্গে সংযুক্ত করে, সম্প্রতি ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে এগুলো। ছবি: সংগৃহীত
নর্ড স্ট্রিম ২ পাইপলাইনের নির্মাণ শেষ হয় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। তবে জার্মানি ছাড়পত্র না দেয়ায় এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে এটির ব্যবহার শুরু করা যায়নি।
আগস্টের শেষদিকে নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয় রাশিয়া। মস্কো বলছে, পাইপলাইনে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে; ইউক্রেন ইস্যুতে তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে, যা সারানো যাচ্ছে না।
বিস্ফোরণের সময় পাইপলাইনগুলো চাপযুক্ত গ্যাসে পূর্ণ ছিল। ডেনিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, সরবরাহ বন্ধ করে দিলেও, পাইপলাইনে যে পরিমাণ গ্যাস রয়েছে তা চলতি সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত বুদবুদ আকারে বের হতে থাকবে বাল্টিক সাগরে।
বাল্টিক সাগরের তলদেশে গ্যাস পাইপলাইনে আকস্মিক এবং ব্যাখ্যাতীত ত্রুটির তদন্ত করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।